বিক্ষোভ সমাবেশের নাম রাখা হয়েছিল ‘শান্তির জন্য বিদ্রোহ’। ছবি: রয়টার্স।
ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করার বিরুদ্ধে বার্লিনের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখালেন অন্তত দশ হাজার মানুষ। তাঁরা ক্ষোভ উগরে দিলেন জার্মান সরকারের বিরুদ্ধে। অস্ত্র পাঠানো নয়, যুদ্ধ থামানোর দাবি জানাল বিক্ষুব্ধ জনতা।
বার্লিন পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সেন্ট্রাল বার্লিনে ‘ব্র্যানডেনবার্গ গেট’-এর সামনে জড়ো হন দশ হাজার মানুষ। পরিস্থিতি সামলাতে ১৪০০ পুলিশকর্মীকে নামানো হয়েছিল রাস্তায়। বিক্ষোভকারীদের উপরে প্রশাসনের তরফে কিছু নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছিল। যেমন কেউ সেনার পোশাক পরতে পারবেন না, সোভিয়েতের পতাকা নিতে পারবেন না, রুশ সেনার গান গাইতে পারবেন না বা কট্টরপন্থী প্রতীক সঙ্গে রাখতে পারবেন না। পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সমাবেশ শান্তিপূর্ণ ছিল। কোনও ঝামেলা বা অশান্তি হয়নি। কোনও দক্ষিণপন্থী দলের কাউকে সমাবেশে দেখা যায়নি। সমাবেশটির আয়োজন করেছিলেন এক বামপন্থী জার্মান রাজনীতিক, সাহরা ওয়াগেননেক্ট। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্ষপূর্তির দিনে জার্মানি-সহ পশ্চিমি শক্তিগুলি কিভকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা আরও অস্ত্র পাঠাবে ইউক্রেনে। কিভকে সমর্থন জানিয়ে মস্কোর উপরে আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। এ দিনের বিক্ষোভ ছিল এই ধরনের সরকারি সিদ্ধান্তগুলির বিরুদ্ধে। বিক্ষোককারীদের মঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানো বন্ধ করুন জার্মান চ্যান্সেলর। অবিলম্বে! ...কারণ প্রতিদিন হাজার খানেক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। ক্রমশ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা।’’
এ দিনের বিক্ষোভ সমাবেশের নাম রাখা হয়েছিল ‘শান্তির জন্য বিদ্রোহ’। আমেরিকার পাশাপাশি জার্মানি সবচেয়ে বেশি অস্ত্র পাঠাচ্ছে ইউক্রেনে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ‘‘সমঝোতা করা হোক, যুদ্ধের গতি আরও বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে কেন?’’ ভিড়ের মধ্যে এক জনের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘এ যুদ্ধ আমাদের নয়’। বার্লিনের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে জার্মান অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার বলেন, ‘‘যাঁরা ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না, তাঁরা অবশ্যই ইতিহাসের অন্যায়ের দিকে রয়েছেন।’’
গত সপ্তাহে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার ভোটে অধিকাংশ দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। ইউক্রেনথেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। ভারত, বাংলাদেশ-সহ ৩২টি দেশ ভোট দেয়নি। ভোট না দেওয়ার জন্য রাশিয়া ধন্যবাদ জানিয়েছে এই দেশগুলিকে। তাতেও ১৯৩ সদস্যের সাধারণ সভায় রাশিয়া প্রায় একঘরে। এ প্রসঙ্গে রাশিয়ার এক শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিক দিমিত্রি পোলয়ানস্কি উষ্মাপ্রকাশ করে বলেছেন, ‘পেশির জোরে’ পশ্চিম এই কাজ করছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে দল পাকাচ্ছে তারা।