দু’দশক পরে ফের নেপালের গ্রাম ও শহরগুলিতে সফল ভাবে স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশীয়দের দু’টি প্রধান দল এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তবে বয়কট করেছে মদেশীয়দের আর একটি সংগঠন রাষ্ট্রীয় জনতা পার্টি।
মদেশীয়দের দাবি মেনে নিতে ইতিমধ্যেই নেপালের আইনসভায় সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করেছে সরকার। ভারত সরকার এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও যত ক্ষণ না পর্যন্ত সংবিধান সংশোধন হচ্ছে, তত ক্ষণ ভোটে অংশ নিতে রাজি হয়নি মদেশীয়দের একাংশ। নেপালে প্রদেশের সীমানা নতুন করে ঠিক করা ও আইনসভায় বেশি সংখ্যায় প্রতিনিধিত্বের দাবি তুলেছে তারা।
তবে এত বছর পরে স্থানীয় নির্বাচনের প্রথম পর্বে প্রায় ৭১ শতাংশ ভোট পড়েছে। সব মিলিয়ে ভোট শান্তিপূর্ণ। কাঠমান্ডু থেকে ১২০ কিমি দূরে ধোলাখা জেলায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে এক জনের। নেপালের তিন জেলা কালিকট, কাভরে ও ধোলাখার তিনটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত রেখেছে নির্বাচন কমিশন।
১৯৯৭ সালের পর থেকে দেশ জুড়ে মাওবাদী তৎপরতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে স্থানীয় নির্বাচন সম্ভব হয়নি পাহাড়ী রাষ্ট্রে। তবে এ বার এই নির্বাচনকে সফল করতে প্রথম থেকেই তৎপর ছিলেন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল। কিছু দিন আগেই তিনি নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেন। নেপালের স্থানীয় নির্বাচনকে সফল করতে মোদীর সহযোগিতা চান নেপালের মাওবাদী নেতা প্রচন্ড। অনেকেই মনে করছেন, দু’দশক ধরে স্থানীয় নির্বাচন না হওয়ায় নেপালে উন্নয়নের প্রক্রিয়া বিরাট ভাবে ধাক্কা খেয়েছে। এখন সেই শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা হচ্ছে।
আজ নেপালের ২৮৩টি স্থানীয় পুর বোর্ডের নির্বাচন নির্ধারিত ছিল।
এর মধ্যে মানাং ও দলফা জেলার দু’টি পুর বোর্ডে বিনা লড়াইয়েই জিতেছেন প্রার্থীরা। ২৮১টি পুরবোর্ডে মেয়র, ডেপুটি মেয়র, পুর প্রতিনিধি হওয়ার লড়াইয়ে প্রায় ৫০ হাজার প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। ভোটকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহও দেখা গিয়েছে। নোওয়াকোট জেলার মাত্রা গ্রামে ভোট দিতে এসেছিলেন ১১৫ বছরের বাতুলি লেমিচানে। এ বারের ভোটে তিনিই সব থেকে বেশি বয়সি ভোটার।
কাঠমান্ডু ও ললিতপুর পুরসভাগুলির ভোট গণনা আজ রাত থেকেই শুরু হয়েছে। বাকি বোর্ডের জন্য গণনা কাল শুরু হবে। নেপালের বেশ কিছু এলাকায় আগামী ১৪ জুন দ্বিতীয় পর্বের ভোট হওয়ার কথা।