একের পর এক বন্দুকহানা। পার্কল্যান্ড থেকে ফ্লরিডা, পর পর বন্দুকবাজের হামলায় বিধ্বস্ত আমেরিকা। তাতেও টনক নড়ছে না প্রশাসনের। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে এক ধাপ এগিয়েও দু’ধাপ পিছিয়ে এসেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাজনৈতিক মহলে টানাপড়েন চললেও বন্দুক নিয়ন্ত্রণে স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলেরই বছর ষোলোর দুই পড়ুয়া বাবা-মার দিকে এগিয়ে দিয়েছে অভিনব এক চুক্তিপত্র।
কী আছে সেই চুক্তিতে?
শিশুদের সুরক্ষার খাতিরে বাবা-মায়েরা সেই নেতাকেই ভোট দেবেন, যিনি বন্দুক আইনে রাশ টানবেন। আর সেই প্রতিশ্রুতি নিয়েই ‘পেরেন্টস প্রমিস টু কিডস’ নামে ওই চুক্তিপত্রে সই করতে হবে বড়দের। বন্দুকবাজের হানায় স্কুলে ১৪ জন পড়ুয়ার মৃত্যু তাড়া করে বেড়াচ্ছিল অ্যাডাম বুখওয়াল্ড এবং জ্যাক হিবসমানকে। তারপরেই অভিভাবকদের সই সংগ্রহের ভাবনা তাদের মাথায় আসে।
শুধু অ্যাডাম আর জ্যাকই নয়, নানা ভাবে বন্দুক আইনের অপব্যবহারের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে অনেক পড়ুয়াই। জ্যাক জানাচ্ছে, তার অনেক বন্ধুই এর প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই মিছিল করেছে। ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়েছে অ্যাডামদের এই অভিনব প্রতিবাদ। আর এই কাজে দুই কিশোরকে সাহায্য করেছে তাদের পরিবার। নানা তথ্য দিয়ে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এই দুই অভিভাবকেরা।
জ্যাকের কথায়, ‘‘নিরাপত্তার প্রয়োজনে বিছানার পাশে আমার বাবা ব্যাট রেখে ঘুমোন, বন্দুক নয়।’’ আশাবাদী অ্যাডাম ও জ্যাকের পরিবার। ভোটের সময়ে এই প্রচার প্রভাব ফেলতে পারে বলেই আশাবদী দুই পড়ুয়ার পরিবারও।
তবে এখানেই থামা নয়। কম্পিউটারের সামনে বসে স্ক্রিন স্ক্রল করতে করতে অ্যাডাম জানাল, শুধু বাবা-মায়েরাই নন, দাদু-ঠাকুমাদের জন্যও একই রকম চুক্তিপত্র আনতে চায় তারা। যেখানে নাতি-নাতনিদের সুরক্ষিত করতে একই রকম প্রতিশ্রুতিপত্রে সই করবেন প্রবীণেরাও। বাদ থাকবেন না নিঃসন্তানরাও। তাঁদের জন্যও বানানো হচ্ছে আলাদা একটা চুক্তিপত্র। ইতিমধ্যেই ‘পেরেন্টস প্রমিস টু কিডস’-এর ফেসবুক পেজে জমেছে অসংখ্য লাইক-কমেন্ট।
মোদ্দা কথা, নেতার পদে থাকতে গেলে অস্ত্র আইনে লাগাম পরাও, দেশের তাবড় রাজনৈতিকদের কাছে এ-টুকুই শুধু বার্তা দুই কিশোরের। আর নিজেদের এই অভিনব প্রচার নিয়ে রীতিমতো আত্মবিশ্বাসী তারা।