পরমাণু হামলার মুখে পড়তে চলেছিল ভারত! পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আঘাত হানার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল!
এমনই তথ্য উঠে এসেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র এক অবসরপ্রাপ্ত কর্তার সদ্য প্রকাশিত নিবন্ধে। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধে হার নিশ্চিত জেনে পরমাণু হামলার মরিয়া চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান। লিখেছেন হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের তৎকালীন সদস্য তথা সিআইএ অ্যানালিস্ট ব্রুস রিডেল।
১৯৯৯ সালে কার্গিলের উঁচু পাহাড়ে গোপনে ঘাঁটি গেড়ে কাশ্মীর উপত্যকায় পাকিস্তান বিধ্বংসী আঘাত হানা শুরু করে। অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকার আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের মুখাপেক্ষী হয়নি। পাল্টা আঘাত হানার সিদ্ধান্ত নেয়। পাহাড়ের আড়াল থেকে হামলা চালাতে থাকা পাক সেনার মোকাবিলা করতে গিয়ে শুরুতে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, ভারতীয় সেনা অচিরেই গুঁড়িয়ে দেয় পাকিস্তানের বাঙ্কারগুলি। ক্রমশ পিছু হঠতে থাকে পাক সেনাবাহিনী। কার্গিল, দ্রাস, বাটালিক যখন দখলমুক্ত, তখন পাকিস্তান আশঙ্কা করেছিল, ভারতীয় বাহিনী এ বার ঢুকে পড়বে পাকিস্তানের ভিতরে। সেখান থেকেই নাকি নতুন মোড় পাক সরকারের সিদ্ধান্তে।
নওয়াজ শরিফ ছুটে গিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের কাছে। যুদ্ধ থামানোর জন্য ভারতের উপর চাপ দিক আমেরিকা। পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দাবি ছিল তেমনই। কিন্তু, ততক্ষণে সিআইএ-র চূড়ান্ত গোপনীয় নোট পৌঁছে গিয়েছে ক্লিন্টনের ওভাল অফিসে। তাতে লেখা ছিল, পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আঘাত হানার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এর ফল মারাত্মক হতে পারে। তৎকালীন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্যান্ডি বার্গার ক্লিন্টনকে তখন পরামর্শ দেন, পাকিস্তানের পাশে একেবারেই না দাঁড়াতে। ক্লিন্টন ভারত-পাক সমঝোতার পক্ষে থাকলেও, বার্গার নাকি বলেছিলেন, পাকিস্তান এই যুদ্ধ শুরু করেছে। তাই কোনও শর্ত ছাড়া আগে তাদেরই মাথা নোয়াতে হবে। সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। তার আগে যুদ্ধবিরতির জন্য ভারতকে চাপ দেবে না আমেরিকা। বার্গারের পরামর্শ মেনে ক্লিন্টন নওয়াজ শরিফকে সেই বার্তাই দেন। দেশে ফিরে পরমাণু হামলার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিতে বাধ্য হন নওয়াজ। এমনই দাবি রিডেলের।
স্যান্ডি বার্গার দিনকয়েক আগে প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর স্মৃতিতে লেখা এক নিবন্ধে, ব্রুস রিডেল সেই অশান্ত সময়ের বর্ণনা দিয়েছেন। ক্লিন্টন-শরিফ বৈঠকে রিডেল উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকের আগে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে প্রেসিডেন্টের পরামর্শের প্রক্রিয়ারও অন্যতম অংশীদার সিআইএ-র এই প্রাক্তন কর্তা। রিডেলের বক্তব্যের সার কথা হল, বার্গারের ঘোর পাকিস্তান বিরোধী অবস্থানের জেরেই ক্লিন্টন শরিফকে চাপে ফেলার পথে হেঁটেছিলেন। তার জেরেই যুদ্ধ থেকে এক তরফা পিছু হঠে পাকিস্তান। ভারত ভয়ঙ্কর পরমাণু হামলার হাত থেকে রক্ষা পায়। দাবি রিডেলের।