হাফিজ সইদ।—ফাইল চিত্র।
নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী হাফিজ সইদের নতুন সংগঠনকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করল পাকিস্তান। লস্কর-ই-তৈবার প্রধান হাফিজ সইদ পাঁচ মাস ধরে গৃহবন্দি। লস্কর নিষিদ্ধ হওয়ার পর তিনি যে মুখোশ-সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন, সেই জামাত-উদ-দাওয়াও নজরবন্দি। বিপদ আঁচ করে আগেই ‘তেহরিক-ই-আজাদি-জম্মু-কাশ্মীর’ নামের আরও একটি সংগঠন তৈরি রেখেছিলেন হাফিজ। ইসলামাবাদ সেই সংগঠনকেও এ বার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সন্ত্রাস প্রসঙ্গে পাকিস্তানকে যে ভাবে কড়া বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার প্রেক্ষিতেই হাফিজের বিরুদ্ধে ফের কঠোর হল নওয়াজ শরিফের সরকার, বলছে ওয়াকিবহাল মহল।
হাফিজ সইদের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা শুধু ভারতে বা পাকিস্তানে নয়, গোটা পৃথিবীতে নিষিদ্ধ। লস্কর নিষিদ্ধ হওয়ায় জামাত-উদ-দাওয়াকে সামনে আনেন হাফিজ। নতুন নামের আড়ালে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চলতে থাকে। কিন্তু চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি হাফিজকে গৃহবন্দি করার পাশাপাশি জামাত-উদ-দাওয়াকে ‘ওয়াচ লিস্ট’-এর আওতায় নিয়ে আসে পাকিস্তান। ওই সংগঠনের কার্যকলাপের উপর সর্বক্ষণ নজরদারি শুরু হয়।
ট্রাম্প-মোদীর সখ্যের এই ছবিই কি আরও চাপে ফেলে দিয়েছে পাকিস্তানকে? বিশেষজ্ঞরা তেমনই মনে করছেন। ছবি: পিটিআই।
হাফিজ সইদের কাছে নাকি খবর ছিল যে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তাঁর এবং তাঁর সংগঠনের বিরুদ্ধে পাক সরকার পদক্ষেপ করতে পারে। সেই জন্য জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়েই তেহরিক-ই-আজাদি-জম্মু-কাশ্মীর নামের একটি সংগঠনকে সক্রিয় করে তোলেন তিনি। জামাত-উদ-দাওয়া যে সব ভারত বিরোধী কার্যকলাপ চালাত, সেগুলির ভার তেহরিক-ই-আজাদির হাতে দিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: মোদীর মার্কিন সফরে ভারতের লাভই দেখছে চিন
গত পাঁচ মাস হাফিজ গৃহবন্দি রয়েছেন এবং জামাত-উদ-দাওয়ার উপর নিরন্তর নজরদারি চলছে। কিন্তু তার জন্য হাফিজের ভারত বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ হয়নি। তেহরিক-ই-আজাদি-জম্মু-কাশ্মীর ওই সব কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছিল। ইসলামাবাদ শুক্রবার ওই সংগঠনকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দিল। আচমকা এই পদক্ষেপে হাফিজ বিপাকে পড়বেন বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই হোয়াইট হাউসে বৈঠক হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে। বৈঠক শেষে যৌথ প্রেস বিবৃতিতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কড়া বার্তা দিয়েছেন ট্রাম্প। পাকিস্তান সম্পর্কে যে অবস্থান তিনি নিয়েছেন, ততটা কড়া অবস্থান এর আগে কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নেননি বলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা মনে করছেন। আমেরিকার এই অবস্থানের প্রেক্ষিতেই ইসলামাবাদ হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হতে বাধ্য হল বলে তাঁদের মত।