পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। ফাইল ছবি।
আর্থিক ভরাডুবির মুখে দাঁড়িয়ে তাঁর দেশ। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে দেশকে আপাত ভাবে স্বস্তি দিতে পারে একমাত্র আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)-এর সাতশো কোটি ডলারের ঋণের প্যাকেজ। কিন্তু আইএমএফের তরফে বহু আগে থেকেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল যে, ওই বিপুল পরিমাণ ঋণ পেতে গেলে মানতে হবে বেশ কিছু কঠিন শর্ত। সেই সব শর্তকে কার্যত ‘কল্পনার বাইরে’ বলে ব্যাখ্যা করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ।
গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদ পৌঁছে পাক সরকারের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন আইএমএফের প্রতিনিধিরা। বলা হচ্ছে, প্রাথমিক ভাবে পাক সরকার নবম পর্যালোচনার শর্ত মানলে ১.২ কোটি ডলার ঋণ পাবে পাকিস্তান। তার মধ্যেই আজ এক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইএমএফের শর্তাবলি নিয়ে মুখ খুলেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। শরিফ বলেছেন, ‘‘আমি গোটা বিষয়টি নিয়ে (ঋণের প্যাকেজ) বিস্তারিত কিছু বলতে চাইছি না। তবে এটুকু বলতে পারি যে আমরা এক অকল্পনীয় আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছি। আইএমএফের সঙ্গে যে সব শর্তে রাজিহতে হবে, তা ভাবনার বাইরে। কিন্তু আমাদের কাছে অন্য রাস্তা খোলা নেই।তাদের শর্ত আমাদের মানতেই হবে।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাক আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, সরকারের কাছে আয়কর ছাড় তুলে দেওয়া আর জ্বালানি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভর্তুকি বন্ধের শর্ত রেখেছে আইএমএফ। যেগুলি মেনে নিলে সরকার-বিরোধী ক্ষোভের আগুন সামাল দেওয়া যাবে না বলেই মনে করছেন শাহবাজ় শরিফ। আগামী বছরের অক্টোবরে দেশে সাধারণ নির্বাচন। সামনের মাসে রয়েছে পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির বেশ কয়েকটি আসনে উপনির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে আইএমএফের যাবতীয় শর্ত মেনে নেওয়া ঝুঁকির হবে জেনেও তা মানতে কার্যত তাঁরা বাধ্য বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন শরিফ।
পেশোয়ারে সাম্প্রতিক মসজিদ হামলার পরে সেখানে গিয়ে নিরাপত্তা আধিকারিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন শরিফ। সূত্রের খবর, হামলায় জড়িত নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী পাক তেহরিক-ই-তালিবানের বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে পাক সেনাবাহিনীর। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও মূলধনের অভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শরিফ। আইএমএফ তাঁদের কঠিন বাস্তবের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন শরিফ। আইএমএফের কর্তার অবশ্য শরিফের এই অভিযোগ সম্পর্কে মুখ খোলেননি।