নওয়াজ় শরিফ। —ফাইল চিত্র।
নওয়াজ় শরিফের রাজনৈতিক কেরিয়ার নতুন করে শুরু করার তোড়জোড় চলছে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে। গত কাল পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি-তে পেশ করা হয়েছে নির্বাচনী (সংশোধনী) বিল, ২০২৩। যেখানে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, পাক আইনসভার কোনও সদস্যের পদ যেন পাঁচ বছরের অতিরিক্ত সময়ের জন্য খারিজ করা না হয়। এক প্রথম সারির পাক সংবাদ চ্যানেল এই খবর জানিয়েছে। বস্তুত, এই বিল আইনে পরিণত হলে পাকিস্তানের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ়ের নির্বাচনে লড়ার পথ সুগম হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
সপ্তাহখানেক আগেই ইঙ্গিতটা দিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। জানিয়েছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর গদি তাঁর দাদা নওয়াজ় শরিফকে ছেড়ে দিতে প্রস্তুত। শাহবাজ় আরও জানান, তিনি চান, আগামী নির্বাচনের জন্য দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ়ই দলের যাবতীয় দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিন। নওয়াজ়ের পরিবারের বাকি সদস্যেরা তখন এ নিয়ে কিছুই বলেননি।
তবে গত কাল পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে যে বিল পেশ করা হয়েছে, তার থেকে এটা স্পষ্ট যে নওয়াজ় যাতে পাকিস্তানের রাজনীতিতে ফিরতে পারেন, সেই প্রয়াস শুরু করে দিয়েছে তাঁর দল। আগামী অক্টোবরে দেশে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা। অনেকেই মনে করছেন, তার আগেই যাতে নওয়াজ়ের নির্বাচনে লড়ার পথ খুলে যায়, সে জন্যই তড়িঘড়ি আনা হয়েছে এই বিল। এই বিলে পাক নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধির কথাও বলা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের সম্মতি ছাড়াই যাতে নির্বাচনের দিনক্ষণ কমিশন নিজে ঠিক করতে পারে, সে প্রস্তাবও রাখা হয়েছে।
২০১৯ সাল থেকে লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে রয়েছেন শরিফ। তার আগে, ২০১৮ সালে পানামা পেপারস দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে জানায়, আজীবন নওয়াজ় কোনও সরকারি পদে থাকতে পারবেন না। লড়তে পারবেন না দেশের কোনও নির্বাচনও। সংশোধনী বিল এনে দেশের শীর্ষ আদালতের সেই রায়কেই খারিজ করতে চাইছে পাকিস্তানের বর্তমান শাসক দল পিএমএল-এন। পাক সেনেট ইতিমধ্যেই এই বিলে সায় দিয়ে দিয়েছে। তবে দেশের আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, শুধু এই বিল আনলেই হবে না। প্রধানমন্ত্রীর পদে ফের বসতে হলে আরও দু’টি দুর্নীতি মামলায় বেসকুর খালাস হতে হবে নওয়াজ়কে।
তবে এই বিল পাশ করাতে দরকার দেশের প্রেসিডেন্টের সম্মতি। প্রাক্তন শাসক দল পাকিস্তান তেহরিক ই-ইনসাফ (পিটিআই) তথা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি এখন হজ করতে দেশের বাইরে রয়েছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার সামলাচ্ছেন পাক সেনেটের চেয়ারম্যান সাদিক সাঞ্জরানি। আলভির এই বিলে সই করার সম্ভাবনা কম। তাই তাঁর জায়গায় সাদিক এই কাজ দ্রুত সেরে ফেলবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।