পাকিস্তানকে চার মাস সময় দিল এফএটিএফ। রয়টার্স
পাকিস্তানকে দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদীদের অর্থসাহায্য বন্ধ করতে হবে আগামী চার মাসের মধ্যে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে তা সম্ভব না হলে এই দেশকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। প্যারিসে আয়োজিত পাঁচ দিনের অধিবেশনের শেষে এমনটাই ঘোষণা করল বিশ্ব সন্ত্রাসে অর্থ যোগানের উপর নজরদারি চালানো আন্তর্জাতিক সংস্থা ফাইনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স বা এফএটিএফ।
এফএটিএফ প্লেনারিতে উপস্থিত ভারতীয় প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, জঙ্গিমদতের কারণে পাকিস্তানের কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রবল সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। এই মুহূর্তে পাকিস্তান এফএটিএফ-এর ধূসর তালিকায় রয়েছে। এই তালিকায় থাকা মানে, এফটিএফ মনে করছে আর্থিক অপরাধ বা জঙ্গিদের অর্থসাহায্য বন্ধ করতে না পারার কারণে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে। সে ব্যাপারেই এবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে এফএটিএফ।
এফএটিএফ সন্ত্রাসবাদীদের অর্থসাহায্য রুখতে ২৭ টি শর্ত দিয়েছিল পাকিস্তানকে। তার মধ্যে মাত্র পাঁচটিকে পূরণ করতে পেরেছে পাকিস্তান। এই দুর্বলতার কারণেই সে দেশকে এতদিন ধূসরাঞ্চলেই রাখা হয়েছিল। এদিনের বৈঠক থেকে পাকিস্তানকে প্রয়োজনীয় অন্য শর্তগুলিকে দ্রুত পূরণ করতে বলা হয়। শুক্রবার এফএটিএফ মুখপাত্র বলেন,‘‘আগামী অধিবেশনের আগেই জঙ্গিমদত রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে পাকিস্তানকে। তা না হলে এফটিএফ তার সদস্য দেশগুলিগুলিকে পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কের বিষয়ে সাবধান করবে।’’
আরও পড়ুন:কাছ থেকে পর পর গুলি! নিজের অফিসেই খুন হিন্দু মহাসভার প্রাক্তন নেতা
আরও পড়ুন:মেনে নিল ইইউ, বরিসের চুক্তি মানবে কি দেশ
আন্তর্জাতিক ভাবে জঙ্গিমদত রুখতে সক্রিয় সংস্থা এফএটিএফ-এর পাঁচদিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন ২০৫ দেশের প্রতিনিধিরা। ছিলেন আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার, রাষ্ট্রপুঞ্জ ও বিশ্বব্যাঙ্কের সদস্যরাও। ভারত-সহ বেশ কয়েকটি দেশ জঙ্গিদমনে পাকিস্তানের ব্যর্থতাকে চিহ্নিত করে। ফলে এই বৈঠকেই পাকিস্তানের ব্ল্যাকলিস্টেড হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। ব্ল্যাকলিস্টিং আটকাতে তিনটি দেশের সমর্থন লাগে। সূত্রের খবর, এই বৈঠকে পাকিস্তানকে সমর্থন করে তুরস্ক, চিন ও মালয়েশিয়া।
অতীতে ইরান, উত্তর কোরিয়াকে কালো তালিকায় ফেলেছে এই সংস্থা। পাকিস্তানকে ২০১৮ সালের জুন মাসের বৈঠকে গ্রে লিস্টে ফেলা হয়। বলা হয় ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসের মধ্যে জঙ্গিদমনে জরুরি ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ নিতে হবে। বলাই বাহুল্য সেই কাজে ব্যর্থ হয়েছে পাকিস্তান।
পাকিস্তান যদি গ্রে লিস্টেই থেকে যায়, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার বা রাষ্ট্রপুঞ্জ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের থেকে আর্থিক সাহায্য পাওয়ার সম্ভাবনা কমবে।