ইমরান খান। — ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করে বিতর্কে জড়াল সে দেশের নির্বাচন কমিশন। পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির আসন্ন নির্বাচনের প্রার্থী হিসাবে ‘পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ’ (পিটিআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান লাহোরের এনএ–১২২ এবং মিয়াঁওয়ালির এনএ–৮৯ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু পাক নির্বাচনের কমিশনের দাবি, ইমরানের নাম ভোটার তালিকাতেই নেই! তাই তাঁর মনোনয়ন বৈধ নয়।
ইমরানের মনোনয়ন বাতিলকে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস’ বলেছে তাঁর দল পিটিআই। দলের মহাসচিব ওমর আয়ুব খান বলেন, ‘‘সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে পিটিআইয়ের মুখোমুখি হওয়ার সাহস না থাকায় এই ধরনের অসাধু পদ্ধতি অবলম্বন করছেন ক্ষমতাসীনেরা। নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে।’’ ঘটনার জেরে পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেছেন পিটিআই কর্মী-সমর্থকেরা।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি’ এবং প্রাদেশিক আইনসভাগুলির নির্বাচন। ইমরান জেলে থাকলেও তাঁর দল পিটিআই ভোটে অংশ নেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নভেম্বরে। ওএসএ মামলার কারণে ইমরান মুক্তি না পাওয়ায় নির্বাচনী প্রতীক ‘ব্যাট’ বজায় রাখতে পিটিআইয়ের সাংগঠনিক নির্বাচন সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন পরিচালনকারী শীর্ষ সংস্থা ‘ইলেকশন কমিশন অব পাকিস্তান’ (ইসিপি)। সেই নির্দেশ মেনে চলতি মাসের গোড়ায় পিটিআই-এর নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ইমরান ঘনিষ্ঠ নেতা গোহর আলি খান।
তোশাখানা মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজায় ইসলামাবাদ হাই কোর্ট স্থগিতাদেশ দিলেও তার পর রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ (ওএসএ)-এ মামলায় জেলবন্দি ছিলেন তিনি। গত ২২ ডিসেম্বর পাক সুপ্রিম কোর্ট ওএসএ মামলায় ইমরানের জামিন মঞ্জুর করার পরে দু’টি আসন থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন তিনি। ২০২২ সালে এপ্রিলে দলীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের একাংশের বিদ্রোহের জেরে প্রধানমন্ত্রিত্বের ‘ইনিংসের’ মাঝপথে ‘রান আউট’ হওয়ার সময় ইমরান জানিয়েছিলেন, তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের সামনে মাথা নত করবেন না। আবার প্রত্যাবর্তন করবেন স্বমহিমায়। কিন্তু কমিশনের সিদ্ধান্তে অনিশ্চিত হয়ে গেল বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন পাক ক্রিকেট অধিনায়কের ‘প্রত্যাবর্তন’।