বাঁ দিকে কবলপ্রীতের আসল ছবি। ডান দিকে সেই ছবি, যেটিতে কারসাজি করে টুইট করেছে পাকিস্তান ডিফেন্স। ছবি: টুইটার।
ফের মিথ্যা ছবি কাণ্ড, ফের ভারত সম্পর্কে অপপ্রচার পাকিস্তানের তরফ থেকে। তার জেরে পাকিস্তান ডিফেন্স-এর টুইটার হ্যান্ডলটাই সাসপেন্ড করে দিল কর্তৃপক্ষ। দিল্লির জামা মসজিদের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে থাকা এক তরুণীর ছবি নিজেদের টুইটার হ্যান্ডলে পোস্ট করেছিল পাকিস্তান ডিফেন্স। কিন্তু প্ল্যাকার্ডে আসলে যা লেখা ছিল, নিজেদের টুইটার হ্যান্ডলে পোস্ট করা ছবিটিতে কারচুপি করে সেই লেখা বদলে দিয়েছিল পাকিস্তান ডিফেন্স। কারসাজি ধরা পড়তেই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে টুইটারে। এর পরেই সাসপেন্ড করা হয়েছে ‘ডিফেন্সপিকে’ নামের ওই টুইটার হ্যান্ডলটি।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী কবলপ্রীত কউর সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের একটি ছবি শনিবার শেয়ার করেছিলেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছিল, তিনি দিল্লির জামা মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁর হাতে একটি প্ল্যাকার্ড রয়েছে, তাতে লেখা, ‘‘আমি ভারতের নাগরিক এবং আমি আমাদের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধের পক্ষে।’’
ভারতীয় পড়ুয়ার এই ছবিকেই হাতিয়ার করে পাকিস্তান ডিফেন্স। নিজেদের হ্যান্ডলে এই ছবি টুইট করে তারা। কিন্তু ফোটোশপের কারসাজিতে প্ল্যাকার্ডের বিষয়বস্তু বদলে দেয়। সেখানে লেখা হয়, ‘‘আমি একজন ভারতীয়, কিন্তু আমি ভারতকে ঘৃণা করি কারণ ভারত হল একটি ঔপনিবেশিক অস্তিত্ব যারা নাগা, কাশ্মীরি, মণিপুরি, হায়দরাবাদ, জুনাগড়, সিকিম, মিজোরাম, গোয়ার মতো জাতিগুলিকে দখল করেছে।’’
আরও পড়ুন: যে কোনও প্রান্তে পরমাণু হামলা চালাতে চিনের হাইপারসনিক প্রস্তুতি
ছবিটি নিয়ে যে কারসাজি হয়েছে, তা ধরা পড়ে শীঘ্রই। কবলপ্রীতের আসল ছবিটি অনেকেই টুইটারে শেয়ার করতে শুরু করেন। ভারতীয় পড়ুয়ার ছবিতে কারসাজি করে ভারত বিরোধী প্রচার চালানোর চেষ্টার তীব্র নিন্দা শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিতর্কের মুখে টুইটটি শেষ পর্যন্ত ডিলিট করে দেয় পাকিস্তান ডিফেন্স। কিন্তু ততক্ষণে প্রতিবাদের পাহাড় জমা হয়েছে। তাই টুইটার কর্তৃপক্ষ পাকিস্তান ডিফেন্সের টুইটার হ্যান্ডলটিকে সাসপেন্ড করে দেয়। আজ অর্থাৎ রবিবারও অকেজোই রয়েছে ডিফেন্সপিকে নামের ওই টুইটার হ্যান্ডল।
আরও পড়ুন: ৪৪ নৌসেনাকে নিয়ে অতলান্তিকে নিখোঁজ সাবমেরিন
পাকিস্তান ডিফেন্স পাক সরকারের সঙ্গে যুক্ত নয়। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক বিষয়-আশয় নিয়ে সবচেয়ে বিশদ এবং প্রামাণ্য তথ্য তাদের কাছেই থাকে বলে পাকিস্তান ডিফেন্স-এর তরফে দাবি করা হয়। ছবি কাণ্ডের পর কিন্তু তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা মারাত্মক ধাক্কা খেল।
এর আগেও পাকিস্তানের তরফে মিথ্যা ছবি দেখিয়ে ভারতকে বদনাম করার চেষ্টা হয়েছে। ছররায় জখম এক প্যালেস্তিনীয় তরুণীর ছবি দেখিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে পাকিস্তানের প্রতিনিধি দাবি করেছিলেন, ছবিটি এক কাশ্মীরি তরুণীর। কিন্তু খুব দ্রুত ভারত সে ভুল ভাঙিয়ে দেয়। প্রমাণ করে দেয়, ছবিটি কাশ্মীরের নয়, প্যালেস্টাইনের। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মঞ্চে মুখ পুড়িয়েছিল পাকিস্তানের। পাকিস্তান ডিফেন্সের কারচুপিও ফের অস্বস্তিতে ফেলল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।