পাক বিমানবাহিনীর জেএফ-১৭। ফাইল চিত্র।
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়া থেকে গোপনে যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশ কিনতে তৎপর হয়েছে পাকিস্তান। ইউক্রেন সরকারের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, চিনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধবিমানের জন্য রাশিয়ায় তৈরি ক্লিমোভ আরডি-৯৩ জেট ইঞ্জিন ও তার যন্ত্রাংশ কেনার বিষয়ে ইতিমধ্যেই গোপনে ভ্লাদিমির পুতিনের দ্বারস্থ হয়েছে ইসলামাবাদ।
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলি একাধিক রুশ সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। জেএফ-১৭ ছাড়াও মিগ-২৯, মিগ-৩৫-সহ একাধিক রুশ যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন নির্মাতা সংস্থা ক্লিমোভ রয়েছে সেই তালিকায়। তার আগে থেকেই ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে, ক্লিমোভের ইঞ্জিন সরবরাহকারী সংস্থা রোসোবোরোনেক্সপোর্ট। ফলে ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশের অভাবে বিপাকে পড়েছে পাক বিমানবাহিনীর জেএফ-১৭ স্কোয়াড্রনগুলি।
এই পরিস্থিতিতে চিনকে এড়িয়ে জেএফ-১৭-র ইঞ্জিন পেতে পাকিস্তানের রুশ-ঘনিষ্ঠতা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকদের একাংশ। তাঁদের মতে, ভবিষ্যতে সামরিক ক্ষেত্রে চিন-নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যেই পাকিস্তানের এই পদক্ষেপ। আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও ইঞ্জিনের জোগান নিশ্চিত করতে পাকিস্তান সরকার গোপনে প্রয়োজনীয় ডলারের সংস্থান করে ফেলেছে বলে ইউক্রেনের রিপোর্টে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সামরিক পরিভাষায় জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানকে ‘মাল্টি-রোল ফাইটার জেট’ বলা হয়। অর্থাৎ, অনেক উঁচু থেকে হামলা চালানো, মাটির খুব কাছাকাছি নেমে বোমাবর্ষণ করা, প্রতিপক্ষের যুদ্ধবিমানের সঙ্গে আকাশে লড়াই (ডগফাইট), শত্রুর আকাশসীমায় ঢুকে বিপক্ষের ঘাঁটি এবং সমরসজ্জার নির্ভুল খবর নিয়ে আসা— এই সব কাজই করতে পারে এই বিমান।
যদিও বহুমুখী দক্ষতায় জেএফ-১৭-র চেয়ে ভারতে তৈরি তেজস কিছুটা এগিয়ে বলেই সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত। তাঁদের মতে ফারাক গড়ে দিয়েছে তেজসের গতি, ক্ষিপ্রতা, বহুদূর উড়ে যাওয়া এবং বেশি জ্বালানি বহনের ক্ষমতা।