অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি।
প্রবল গরম ও খরার মুখোমুখি হতে চলেছে বিশ্বের ৯০ শতাংশ জনসংখ্যা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অব জিওগ্রাফি’ তাদের একটি গবেষণাপত্রে এমনটাই দাবি করেছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার সাসটেনেবিলিটি’ পত্রিকায়।
২০২২ সালে তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব ভালমতো টের পাওয়া গিয়েছে। গত এক-দু’বছর নয়। শেষ এক দশকের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেই বোঝা যায়, লন্ডন থেকে শাংহাই, গোটা বিশ্বের তাপমাত্রা ক্রমবর্ধমান। জলহাওয়া বিচার করে বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, মারাত্মক গরমের সঙ্গে খরার যোগ রয়েছে। প্রবল গরমে স্থলভাগে জলসঙ্কট দেখা দেবে। অর্থাৎ জমিতে জলের ভাগ কমবে। ফলে খরা তৈরি হবে অবধারিত ভাবে। উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে আসা অতিথি গবেষক জিয়াবো ইন এবং অক্সফোর্ডের গবেষক লুইস স্লেটার জানিয়েছেন, এ ভাবে চললে সমাজের জন্য তা বিপজ্জনক হবে। বাস্তুতন্ত্রে প্রভাব পড়বে। অর্থনীতি ধাক্কা খাবে। এবং শেষমেশ একটা সামাজিক অসাম্য তৈরি হবে। গরিব মানুষেরা আরও গরিব হবেন। গ্রামীণ এলাকাগুলিতে ক্ষতি বেশি হবে।
গবেষণাপত্রটিতে বলা হয়েছে, ‘‘প্রবল উষ্ণায়ন ও স্থলভাগে জলসঙ্কট, এই দুইয়ের যুগ্ম প্রভাবে গোটা পৃথিবীজুড়ে ঘনঘন প্রাকৃতিক ঝঞ্ধা তৈরি হওয়া দশগুণ বাড়বে। কার্বন নিঃসরণও সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে। যদি কার্বন নিঃসরণ সবচেয়ে কমও রাখা হয়, তাতেও বিশ্বের জনসংখ্যা ও জিডিপি-র ৯০ শতাংশ বিপদের সম্মুখীন হবে।’’
ইন বলেন, ‘‘আমরা অঙ্ক কষে দেখেছি, যন্ত্রের সাহায্যে একটি নতুন পদ্ধতিতে কার্বন বাজেট-এর নথি খতিয়ে দেখেছি। এ ভাবে উষ্ণায়ন ও জলসঙ্কটে বাস্তুতন্ত্রের উপর কী প্রভাব পড়বে, তা খতিয়ে দেখা হয়েছে।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, প্রকৃতি যখনই বিপদে পড়বে, তার সূত্র ধরে বিশ্বের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জলসঙ্কট ‘কার্বন সিঙ্ক’-এর ক্ষমতা হ্রাস করবে। ‘কার্বন সিঙ্ক’ হল অরণ্য, সমুদ্র বা অন্যান্য প্রাকৃতিক পরিবেশযা বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড শুষে নিতে পারে। ফলে সে দিক থেকেও পৃথিবীর বাতাসে বিপদ ঘনাবে। বিজ্ঞানী স্লেটার জানিয়েছেন, অবিলম্বে পৃথিবীর উষ্ণায়নের জেরে কী কী পারিপার্শ্বিক প্রভাব পড়তে পারে, তা জানা জরুরী।