কিশোর বয়সে হামজা। ছবি: টুইটার।
বাবার হাতে তৈরি জঙ্গি গোষ্ঠীকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি তিনি। বাবাকে হত্যার ‘প্রতিশোধও’ নিতে চান। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের এক প্রাক্তন অফিসারের দাবি, এ ভাবেই নিজেকে ‘তৈরি’ করছেন ২৮ বছর বয়সি হামজা। ওসামা বিন লাদেনের ছেলে।
৯/১১-র পরে আল কায়দা নিয়ে তদন্তের মুখ্য দায়িত্বে ছিলেন এফবিআইয়ের প্রাক্তন এই অফিসার আলি সুফান। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে অভিযানের পরে লাদেনের ডেরা থেকে বেশ কিছু ব্যক্তিগত চিঠিপত্র উদ্ধার করেছিল মার্কিন নেভি সিল। সেই চিঠি থেকেই লাদেনের এক ছেলে, হামজার কথা জানতে পেরেছিলেন তাঁরা। বিল লাদেনকে মারার সময়ে, ২০১১ সালে, যার বয়স ছিল ২২।
উদ্ধার হওয়া চিঠি ও অন্যান্য নথি সম্প্রতি প্রকাশ করেছে এফবিআই। ওসামাকে লেখা হামজার চিঠিগুলির বয়ান থেকেই স্পষ্ট, বাবার প্রতি বরাবরই অনুরক্ত ছিলেন তিনি। ওসামা পাকিস্তানে গা ঢাকা দিয়ে থাকার আগেও বেশ কয়েক বছর বাবার সঙ্গে দেখা হয়নি হামজার। কিন্তু চিঠিতে হামজা লিখেছেন, ‘‘আপনার চাউনি, হাসি, আমাকে বলা প্রত্যেকটা শব্দ মনে গেঁথে রয়েছে।’’ আর
একটি চিঠিতে হামজা লিখেছেন, ‘‘আমি নিজেকে ইস্পাত-কঠিন করে গড়ে তুলেছি। আল্লাকে পেতেই জিহাদের এই পথ— তার জন্যই আমাদের বেঁচে থাকা।’’
আরও পড়ুন:রোজ প্রেস ব্রিফিংও তুলে দিতে চান ট্রাম্প
সুফানের দাবি, তরুণ হামজা নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তাঁর বয়স যখন অনেকটাই কম, ছোট্ট সেই কিশোর হামজার মুখ আল কায়দার প্রচার-ভিডিওয়, পোস্টারে ব্যবহার করা হতো। হামজার হাতে ধরা থাকত বন্দুকও। এই জানুয়ারিতেই আমেরিকা তাঁকে ‘বিশেষ ভাবে চিহ্নিত আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ বলেছে। তাঁর বাবাকে একই তকমা দিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন।
গত দু’বছরে হামজার কণ্ঠে চারটি অডিও বার্তা প্রকাশিত হয়েছে। ওসামার কণ্ঠস্বরের সঙ্গেও এই ছেলের যথেষ্ট মিল রয়েছে, বলছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। এমনকী, সম্প্রতি একটি ভিডিওয় হামজা এমন সব বাক্য-শব্দ ব্যবহার করে কথা বলেছেন, যা ছত্রে ছত্রে আল কায়দার প্রাক্তন প্রধানকেই মনে করাচ্ছে। সুফানের বক্তব্য, ‘‘আমেরিকাকে স্পষ্ট হুমকি দিয়েছেন হামজা। বলেছেন, ‘মার্কিন নাগরিকরা শুনুন, আমরা আসছি। আপনারা বুঝতে পারবেন। ইরাক, আফগানিস্তান আর আমার বাবাকে নিয়ে আপনারা যা করেছেন, তার প্রতিশোধ আমরা নেবই। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, বদলা নিতে নিজেকে তৈরি করছেন ওসামা-পুত্র!’’