নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপে (এনএসজি) ভারত ঢুকতে পারবে কি না, ৪৮ দেশের সংগঠনের বৈঠকে তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হল না। মূলত ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতেই অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনাতে এনএসজি-র এই দু’দিনের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। অধিকাংশ সদস্য দেশই ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা থেকে সরে এলেও, চিন অনড়। তাই কোনও সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে বৈঠক।
পরমাণু জ্বালানি এবং সরঞ্জামের লেনদেন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য গঠিত ৪৮ দেশের সংগঠন এনএসজি-তে ভারত নেই ঠিকই। কিন্তু ওই সংগঠনের সদস্যদের যে সব অধিকার রয়েছে, ভারতকে ইতিমধ্যেই তার অনেকগুলি অধিকারই দেওয়া হয়েছে। এনএসজি-র বাইরে থাকা দেশগুলি পরমাণু প্রযুক্তি এবং পরমাণু জ্বালানির অবাধ লেনদেন করতে পারে না। ভারত সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও ২০০৮ সালে ভারতকে সেই ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে এনএসজি। তার পরই আমেরিকা, রাশিয়ার মতো দুই বৃহৎ শক্তির সঙ্গে ভারতের অসামরিক পরমাণু চুক্তি হয়েছে। আমেরিকা এ বার ভারতকে এনএসজি-র সদস্যপদ পাইয়ে দিতেও তৎপর। বৃহস্পতিবার তা নিয়ে ভিয়েনাতে বৈঠক শুরুর পর ভারতের পক্ষে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়। ভারত একটি দায়িত্বশীল পরমাণু শক্তিধর দেশ— আমেরিকার এই বক্তব্য মেনে নিয়ে অধিকাংশ দেশই ভারতকে এনএসজি-তে স্বাগত জানাতে তৈরি ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড এবং তুরস্কের মতো যে কয়েকটি দেশ ভারতের মৃদু বিরোধিতা করছিল, ভিয়েনার বৈঠকে তারাও শেষ পর্যন্ত ভারতকে স্বাগত জানাতে তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু চিন ভারতের তীব্র বিরোধিতায় শেষ পর্যন্ত অনড় থেকেছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। চিন বার বারই বলেছে নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি (এনপিটি) বা পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে সই করা হল এনএসজি-তে অন্তর্ভুক্তির প্রাথমিক শর্ত। ওই চুক্তিতে সই না করা পর্যন্ত কিছুতেই ভারতকে এনএসজিতে ঢুকতে দেওয়া উচিত নয়।
আরও পড়ুন:
ভারতের অ্যান্টি-মিসাইল নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করল পাকিস্তান
এনপিটি-তে ভারত অবশ্য সই করবে না। ওই চুক্তিকে একটি বৈষম্যমূলক চুক্তি বলে মনে করে ভারত। চিন সেই সুযোগ নিয়েই ভারতের এনএসজি-প্রবেশ আটকাতে চাইছে। চিন ছাড়া বাকি সব দেশই ভারতকে স্বাগত জানাতে রাজি থাকায়, ভিয়েনার বৈঠকে ভারতের আবেদন খারিজ করার সিদ্ধান্ত হয়নি। ২০ জুন ৪৮টি দেশ আবার বৈঠকে বসছে দক্ষিণ কোরিয়ার সোল-এ। সেই বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে কূটনৈতিক মহল সূত্রের খবর।