ফাইল চিত্র।
নিউজ়িল্যান্ডে এক মহিলার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কাঠগড়ায় ফাইজ়ারের তৈরি করোনা প্রতিষেধক। সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, এই টিকা নেওয়ার পরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জেরে প্রাণ হারান ওই মহিলা। টিকা নেওয়ার ফলে এ ধরনের ঘটনা তাদের দেশে এই প্রথম।
হৃদ্যন্ত্রের পেশিতে প্রদাহের (মায়োকার্ডিটিস) জেরে এই মৃত্যু বলেই প্রাথমিক অনুমান এক নিরপেক্ষ প্রতিষেধক নিরাপত্তা পর্যালোচনা বোর্ড। যদিও তারা এ-ও জানায় যে, একাধিক শারীরিক সমস্যা ছিল ওই মহিলার। প্রতিষেধক নেওয়ার পর সেই বিষয়গুলিও মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলে মত বোর্ডের। তবে এই মৃত্যুর কারণ নিয়ে সরকারি ভাবে এখনও কিছু ঘোষণা করা হয়নি। কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছোনোর আগে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
এ ধরনের প্রদাহের ঘটনা বিরল হলেও ফাইজ়ার এবং মর্ডানার টিকার ক্ষেত্রে তা ঘটার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না ‘ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সি’। বিশেষত অল্পবয়সি যুবকদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বেশি। ইউরোপে ফাইজ়ারের টিকা নেওয়ার পরে ১৯৫ জন মায়োকার্ডিটিসে আক্রান্ত হন বলে সূত্রের খবর। গড় হিসেবে যা প্রত্যেক দশ লক্ষের মধ্যে পাঁচজন। উপসর্গ হল, টিকা নেওয়ার পরে বুকে হঠাৎ যন্ত্রণা শুরু হওয়া, দ্রুত শ্বাস ফুরিয়ে আসা এবং অনিয়মিত হদ্স্পন্দন। এর কোনও একটা দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তাঁদের বক্তব্য, এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত বিরল। ফাইজ়ারের টিকার বিস্তর উপকারিতার কাছে যা কিছুই না। ফলে ভয়ের কোনও কারণ নেই।
প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়া থেকে ডেল্টার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় ১৭ অগস্ট থেকে দেশে লকডাউন ঘোষণা করেন নিউজ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্দা আর্ডের্ন। তা সত্ত্বেও সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে সোমবার থেকে অকল্যান্ড শহরে লকডাউনের মেয়াদ আরও দু’সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে অক্টোবরে শীর্ষে পৌঁছবে সংক্রমণ— এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার পর এই অঞ্চলে হু হু করে বাড়ছে সংক্রমিতের সংখ্যা। এ দিন ১২৯০ জন নতুন সংক্রমিতের হদিস মিলেছে এই প্রদেশে। অন্য দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) হুঁশিয়ারি, আগামী ১ ডিসেম্বরের মধ্যে ইউরোপে কোভিডে প্রাণ হারাতে চলেছেন কমপক্ষে ২,৩৬,০০০ জন। ডেল্টার লাগামছাড়া সংক্রমণের জেরেই এই আশঙ্কা, জানিয়েছে তারা।
ডেল্টা আতঙ্কের মাঝেই সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের এক নয়া স্ট্রেন ঘিরে মাথাচাড়া দিয়েছে দুশ্চিন্তা। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম ধরা পড়া এই স্ট্রেন এখন ছড়িয়ে পড়েছে চিন, ইংল্যান্ড, নিউজ়িল্যান্ড, পর্তুগাল, সুইৎজ়ারল্যান্ড-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। গবেষকদের দাবি, ‘সি.১.২’ নামে এই ‘ভেরিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ বেশ কিছু ‘ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন’-এর থেকেও দ্রুত হারে মিউটেট করে! তা ছাড়া, আলফা এবং বিটা স্ট্রেনে আক্রান্তদের শরীরে তৈরি হওয়া স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা তো বটেই, প্রতিষেধকের প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও টেক্কা দিতে পারে এই স্ট্রেন। তবে গবেষণাটি এখনও পর্যালোচনা হয়নি। তাই এর ভিত্তিতে এখনই আতঙ্কিত না হওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।