ছবি: এএফপি।
চিনের ছায়া থেকে অনেকটাই মুক্ত হল মলদ্বীপ। আর তাতে অনেকটাই স্বস্তিতে দিল্লি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মলদ্বীপে গিয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট ইবু সোলিহ্ -র শপথ অনুষ্ঠানে দিনভর থাকলেন। নতুন করে সহযোগিতার বার্তা দিল ভারতের বহু পুরনো বন্ধু এই দ্বীপরাষ্ট্রটি।
মলদ্বীপে চিনপন্থী প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন সরকারের পতনের পর মোদীর টুইট ছিল, ‘এই নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রতি মলদ্বীপের মানুষের সামগ্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ এবং আইনের প্রতি মর্যাদার প্রতিফলনও বটে। ভারতবাসী চায় গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধশালী এবং শান্তিপূর্ণ মলদ্বীপ।’
‘ভারতই প্রথম’ নীতিতে দেশকে ফেরানোর ইঙ্গিত জয়ের পরেই দিয়েছিলেন মলদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট। যে সব ভারতীয় প্রকল্পের কাজ আটকে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ফের চালু করার আশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় সংস্থাগুলোকে ফের মলদ্বীপে কাজ শুরু করতে দেওয়া এবং ভারত-মলদ্বীপ সামরিক সম্পর্ক ফের মজবুত করার ইঙ্গিত দিয়েছেন সোলিহ্। আজকের শপথ অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ স্তরের বিদেশি নেতা হিসেবে মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সোলিহ্ স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, মলদ্বীপকে ফের ভারতমুখী করতে চলেছেন তিনি। ফলে এই দেশটিতে গত প্রায় এক বছর ধরে চিনের দাপট যে ভাবে ক্রমশ বাড়ছিল, তা আপাতত কাটছে বলেই মনে করছে সাউথ ব্লক।
আজ শপথ অনুষ্ঠানের পর দু’দেশের শীর্ষ বৈঠক শেষে একটি যৌথ বিবতি দেওয়া হয়। তাতে মলদ্বীপের বেহাল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সমস্ত সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত। সন্ত্রাসবাদ দমনে যৌথ সহযোগিতার বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে। চিনের নাম না করে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলা হয়েছে, ‘সোলিহ-র জয়ের পর দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার পুনর্নবীকরণ হল। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা বজার রাখার প্রশ্নে দু’দেশের নেতাই এখন ঐক্যবদ্ধ।’
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, দু’দেশের মধ্যে অস্বস্তিটা শুরু হয়েছিল ২০১৭-র
ডিসেম্বর থেকে। নয়াদিল্লির সেই অস্বস্তিকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে চিনপন্থী প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন সেনা ঢুকিয়ে দেন দেশের পার্লামেন্টে। ভারতের বিরুদ্ধেও সুর চড়ান তিনি। তাঁকে সমর্থন করার পাশাপাশি চিন জানিয়ে দেয়, ওখানে ভারতের হস্তক্ষেপ মানা হবে না। নানা ভাবে মলদ্বীপে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে শুরু করে চিন। কিন্তু তার পরেও অনেক হিসেব উল্টে দিয়ে নির্বাচনে হেরে যান ইয়ামিন। আর তাতেই চিনের দাপট কমতে শুরু করে।