ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের কৌশলগত অবস্থানকে পোক্ত করতেই পেলোসির এই এশিয়া সফর, মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের কৌশলগত অবস্থানকে মজবুত করার জন্য এ বার সপার্ষদ এশিয়া সফরে বেরোলেন আমেরিকার স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। যদিও তাঁর এই সফর নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। কারণ, পেলোসির সফরসূচির মধ্যে হাওয়াই, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুরের নাম থাকলেও তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে নেই তাইওয়ানের নাম। প্রসঙ্গত, চিন তাইওয়ানকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করলেও, হোয়াইট হাউস সর্বদাই তাইওয়ানকে স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়ে এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দীর্ঘ ফোনালাপের সময় চিনা প্রেসিডেন্ট তাইওয়ান যে তাদের অঙ্গ তা বুঝিয়ে দেন। পরে তাইওয়ানের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “আগুন নিয়ে খেললে তার ফল ভুগতে হবে।”
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের প্রভাব খর্ব করার জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই সচেষ্ট আমেরিকা। সেই লক্ষ্যে এশিয়ার চিন-বিরোধী দেশগুলিকে একজোট করতে চাইছে আঙ্কেল টমের দেশ। আমেরিকার এই কৌশলের প্রতিধ্বনি পাওয়া গিয়েছে পেলোসির কথাতেও। একটি বিজ্ঞপ্তিতে পেলোসি বলেছেন, এই অঞ্চলে ‘মিত্র দেশগুলির প্রতি দায়বদ্ধতা ও সৌহার্দ্য রক্ষার স্বার্থেই’ তাঁর এই সফর। সফরসূচির অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন পেলোসি। বৈঠকে যৌথ স্বার্থ ও মূল্যবোধের অগ্রগতি এবং এই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, ভূকৌশলগত কারণেই এই অঞ্চলের ওপর সজাগ দৃষ্টি রয়েছে ভারতের। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, চিন-ভারত সীমান্ত সঙ্কটের আবহে চিনা আগ্রাসন রোখার লক্ষ্যে আমেরিকার সঙ্গে কৌশলগত অক্ষ বাড়াতে চাইছে সাউথ ব্লক। তবে তাইওয়ান প্রশ্নে চিনের হঁশিয়ারির মুখে বাইডেন প্রশাসন পিছু হঠল কি না, তা নিয়ে ভাবিত কূটনীতিকরা। রবিবারও চিনের বায়ুসেনার মুখপাত্র জানিয়েছেন, জাতীয় অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় চিন বদ্ধপরিকর। আমেরিকা অবশ্য তাইওয়ানের সঙ্গে সরকারি ভাবে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক না রাখলেও, ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক’ বজায় রাখে এবং ‘আত্মরক্ষা’র জন্য তাদের অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে।