জিম্বাবোয়ের রাস্তায় সেনার টহল। ছবি: এএফপি।
শহরের রাস্তায় সেনা বাহিনীর ট্যাঙ্ক নেমে আসায় উত্তেজনাটা বাড়ছিলই। সেই উত্তেজনার পারদ আরও বহু গুণ চড়ল, যখন সেনা ঢুকে পড়ল জিম্বাবোয়ের মুখ্য সরকারি সম্প্রচার কেন্দ্র জেডবিসি-র দফতরে। বোঝা গেল, দেশে সেনা অভ্যুত্থান ঘটেছে। কিছু সময়ের মধ্যে সেনা বাহিনীও একই দাবি জানায়। তবে তাদের দাবি, প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবেকে তাঁর পদে রেখেই এই কাজ করা হয়েছে।
এ দিন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জেকব জুমা জানিয়েছেন, অভ্যুত্থানের পর তাঁর সঙ্গে মুগাবের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে। মুগাবে সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে জুমার অফিস। তবে তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
প্রেসিডেন্ট মুগাবে দেশের ভাইস প্রেসিডেন্টকে সম্প্রতি সরিয়ে দিয়েছিলেন। আর তার পর থেকেই দেশে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। রাজনৈতিক সেই উত্তেজনা শুরু হওয়ার পর দেশের সেনাপ্রধান পদক্ষেপ করা হবে বলে বিবৃতি দেন। এর পরেই বুধবার সকালে হারারের রাস্তায় নেমে আসে সেনা বাহিনী। প্রেসিডেন্টের মুখপত্র হিসাবে কাজ করা জেডবিসি-র দফতরে ঢুকে পড়ে তারা। সেখানকার কর্মীদের বাইরে বের করে দেওয়া হয়।
এ দিনের ঘটনার পর সেনার তরফে বিবৃতি দিয়ে দাবি করা হয়েছে, “এটা ক্ষমতা দখল নয়। প্রেসিডেন্টের চারপাশে যে অপরাধীদের বৃত্ত তৈরি হয়েছিল, যাঁদের অপরাধের জেরে দেশে সামাজিক ও অর্থনেতিক দুরবস্থা বেড়েই চলেছে তাঁদের সরাতেই এই পদক্ষেপ। প্রেসিডেন্ট অক্ষত রয়েছেন। তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও কোনও ক্ষতি করা হয়নি।” পাশাপাশি, ৯৩ বছরের প্রেসিডেন্ট মুগাবে যে সেনার হেফাজতে রয়েছে তা-ও জানানো হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, সেনা অভ্যুত্থানের পর রাজধানী হারারের দখল নিয়েছে সেনা। দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় টহলদারি চলছে সাঁজোয়া গাড়ির। পার্লামেন্ট, সরকারি অফিস, আদালতে যাওয়ার মুখ্য রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হারারের উত্তরাঞ্চল থেকে গোলাগুলিও শব্দ শোনা যায় বলে খবর।
আরও পড়ুন
আস্ত একটা দেশের মালিক এই ভারতীয়!
বৈঠকে মোদী-লি, উত্তেজনা কমাতে চায় বেজিং-দিল্লি
ধর্ষকদের হাত থেকে রেহাই নেই ১৮ মাসের শিশুরও
রবার্ট মুগাবে। রয়টার্সের তোলা ফাইল চিত্র।
জিম্বাবোয়ের এই সাম্প্রতিক অস্থিরতা শীঘ্রই কেটে যাবে বলে দাবি সেনার। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমাদের লক্ষ্যপূরণ হলেই অবস্থা স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।” সেনার বিভিন্ন দাবি সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট মুগাবে বা তাঁর স্ত্রী গ্রেসকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। তাঁদের তরফে কোনও বিবৃতিও মেলেনি।
এই রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেই দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেছে জিম্বাবোয়ের বিরোধী দল মুভমেন্ট ফর ডেমোক্র্যাটিক চেঞ্জ। পাশাপাশি, বিরোধী দলের দাবি, সামরিক মধ্যস্থতায় ‘স্থিতিশীল, গণতান্ত্রিক এবং প্রগতিশীল দেশ’-এ পরিণত হবে জিম্বাবোয়ে।