গাজ়া ভূখণ্ডে ইজ়রায়েলি বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণে অন্তত ৭৭ জন নিহত হয়েছেন। ছবি: রয়টার্স।
আমেরিকা-সহ বহির্বিশ্বের চাপের মুখে পড়ে শান্তি আলোচনায় নিমরাজি হলেও ইজ়রায়েল যে যুদ্ধের পথ থেকে সহজে সরছে না, তা ফের স্পষ্ট হয়ে গেল মঙ্গলবার। আজ জানা গিয়েছে, গত কাল গাজ়া ভূখণ্ডে ইজ়রায়েলি বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণে অন্তত ৭৭ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই মহিলা ও শিশু।
দক্ষিণ গাজ়ার খান ইউনিসের আবাসান শহরের একটি পরিত্যক্ত স্কুলবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন কয়েক’শো শরণার্থী। মঙ্গলবার সেই আল-আদা স্কুলেই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইজ়রায়েলি সেনা। এই হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন, জখম ৫৩। হতাহতদের বেশির ভাগই শিশু ও মহিলা। পশ্চিম এশিয়ার এক প্রথম সারির সংবাদ সংস্থার ওয়েবসাইটে দেওয়া এক ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, হামলার পরে ধ্বংসস্তূপে বসে কাঁদতে কাঁদতে এক কিশোর বলছে, ‘‘আমরা বসে ছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ। আমার কাকা, ভাই-বোন— কে যে কোথায় ছিটকে পড়ল, জানি না!’’ সাংবাদিকদের কিশোরটি জানিয়েছে যে, এই হামলায় তার দশ জনেরও বেশি আত্মীয় নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে বেশির ভাগই তার তুতো ভাই-বোন। হামলার সময়ের আর একটি ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, স্কুল চত্বরে ফুটবল খেলছে কিশোরেরা। হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ। তারপরেই এ দিক-ও দিক পালাতে শুরু করে সবাই।
গতকাল ডের এল-বালা-র বুরেজ শরণার্থী শিবিরেও হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েলি সেনা। বোমাবর্ষণে সেখানে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৪ জনই শিশু। আল-আদা স্কুল ও শরণার্থী শিবিরে হামলাকে ‘প্যালেস্টাইনিদের নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন হামাস মুখপাত্র।
এ দিকে, সম্ভাব্য অস্ত্র-বিরতি নিয়ে আলোচনা করতে গত শুক্রবার দোহায় পৌঁছেছে ইজ়রায়েল ও হামাসের প্রতিনিধি দল। ইজ়রায়েলি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সে দেশের গুপ্তচর প্রধান ডেভিড বার্নিয়া। তবে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘এখনও দু’পক্ষের বিস্তর মতপার্থক্য রয়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক প্রথম সারির কূটনীতিক জোসেফ বোরেল গত কালের হামলার নিন্দা করে সমাজমাধ্যম এক্সে লিখেছেন— ‘ইজ়রায়েলি-হামাস দ্বন্দ্বের বোঝা কত দিন আর সাধারণ মানুষকে বহন করতে হবে? সব বন্দির মুক্তি, শরণার্থীদের আশ্রয় ও তাঁদের প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য অবিলম্বে যুদ্ধ-বিরতি প্রয়োজন।’ সংবাদ সংস্থা