মিষ্টিমুখ: মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে কেক নিয়ে হাজির হল উড়ান সংস্থা। দুবাইয়ের পথে মাঝআকাশে চলছে সেই কেক কাটা। —নিজস্ব চিত্র।
দু’বছর পরে আবার লন্ডনে এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা থেকে দুবাই হয়ে আজ ভোরে গ্যাটউইক বিমানবন্দরে পৌঁছন তিনি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তাঁর এ বারের বিদেশ সফর সব মিলিয়ে এক সপ্তাহের। অর্ধেকটা লন্ডনের জন্য বরাদ্দ। বাকি স্কটল্যান্ডের এডিনবরায়। অন্যান্য কর্মসূচির পাশাপাশি দু’জায়গাতেই উদ্যোগপতিদের সঙ্গে বিনিয়োগ-বৈঠকে বসবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে থাকবেন তাঁর সফরসঙ্গী শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরাও।
এই সফরের সলতে পাকানো অবশ্য শুরু হয়েছিল ‘ইংলিশ হেরিটেজের’ আমন্ত্রণ কেন্দ্র করে। ভগিনী নিবেদিতার ১৫০ বছর উপলক্ষে উইম্বলডনের হাই স্ট্রিটে তাঁদের পারিবারিক বাসভবনটি ‘নীল ফলক’ (ব্লু প্লাক) লাগিয়ে চিহ্নিত করা হবে। ‘ইংলিশ হেরিটেজ’ ধারাবাহিক ভাবে এই ধরনের কাজ করে আসছে। নিবেদিতার সার্ধশতবর্ষে তাঁর বাড়ি ফলক-চিহ্নিত করার অনুষ্ঠানে মমতাকে আমন্ত্রণ জানায় তারা। একই অনুরোধ যায় রামকৃষ্ণ মিশন থেকেও। কাল ১২ নভেম্বর ওই অনুষ্ঠানে রামকৃষ্ণ মিশনের সহ-অধ্যক্ষ স্বামী সুহিতানন্দের উপস্থিত থাকার কথা।
গত বার মমতা এসেছিলেন জুলাই মাসে। তাঁর নিজের রাজ্যে তখন ভরা বর্ষা, দুর্যোগ, বন্যার ভ্রূকুটি। তাই সফর কাটছাঁট করে তিন দিনের মাথায় ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। এ বার শীতের ইউরোপে তাঁর আগামী সাত দিন কেমন কাটে, আপাতত সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: ত্রিপাক্ষিক নয়, চিঠি দিল রাজ্য
আজ সাড়ে ছ’টা নাগাদ মমতার বিমান যখন গ্যাটউইকে নামে, লন্ডনের আকাশে তখনও আলো ফোটেনি। এখন এখানে সূর্য উঠছে সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ। সেই সঙ্গে ঘন মেঘ ও বৃষ্টি। তারই মধ্যে বিমানবন্দর থেকে হোটেলের পথে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। গতবারের মতোই এ বারও সেন্ট জেমস কোর্ট হোটেলে উঠেছেন। সঙ্গে রয়েছেন মুখ্যসচিব মলয় দে এবং মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের প্রধান আধিকারিক গৌতম সান্যাল। আগামী কাল অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রী অমিত মিত্রর পৌঁছনোর কথা। গুয়াহাটিতে জিএসটি-র বৈঠক সেরে আসছেন বলে একদিন পরে আসছেন তিনি।
আজ বিশেষ কোনও কর্মসূচি নেই মমতার। তবে চিরাচরিত ভাবে তাঁর রাস্তায় হেঁটে বেড়ানোর পরিকল্পনা আপাতত অনিশ্চিত। বিদেশে গেলেও আম নাগরিকের মতো রাস্তায় হাঁটতে বরাবরই ভালবাসেন মমতা। কিন্তু এ বার যদি আবহাওয়া অনুকূল না হয়, তা হলে নির্দিষ্ট কর্মসূচিগুলির বাইরে তাঁকে হোটেলেই কাটাতে হবে। সেই অনিশ্চয়তায় মমতা স্বাভাবিক ভাবেই অখুশি। কাজের ফাঁকে অবসরে লন্ডনের রাস্তায় হাঁটতে না পারলে আফশোস থেকেই যাবে মমতার।
তবে সান্ত্বনা একটাই। রবি ও সোমবার তাঁর লন্ডনে থাকাকালীন আবহাওয়ার একটু উন্নতি হতে পারে বলে পূর্বাভাস। যদিও সবাই জানে লন্ডনের আবহাওয়া দেবা ন জানন্তি...।