প্রতীকী চিত্র।
বছর খানেক আগেও মলদ্বীপে ভারতীয় পর্যটকদের সংখ্যা নেহাত কম ছিল না। যত মানুষ মলদ্বীপে ঘুরতে যেতেন, তাঁদের মধ্যে ভারতীয়দের আধিক্যই বেশি ছিল। কিন্তু গত কয়েক মাসেই সেই ছবি কিছুটা পাল্টেছে। সম্প্রতি সে দেশের পর্যটক মন্ত্রকের প্রকাশিক তথ্য থেকে বোঝা যাচ্ছে, ভারতীয়দের মলদ্বীপ ‘প্রেম’ কমেছে অনেকটাই। তবে মলদ্বীপে যাওয়া একে বারে বন্ধ করেননি ভারতীয়রা। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে মলদ্বীপে ভারতীয় পর্যটক কমেছে প্রায় ৩৩ শতাংশ। কূটনৈতিক মহলের মতে, ভারত এবং মলদ্বীপের মধ্যে চলমান ‘ঝগড়া’র কারণেই কমেছে পর্যটক। যদি সমস্যা না মেটে তবে ভবিষ্যতে ভারতীয় পর্যটক আরও কমবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। ভারতের সঙ্গে ‘ঝগড়া’য় গিয়ে আখেরে ক্ষতিই হয়েছে মলদ্বীপের, এমনই কথা মেনে নিয়েছেন সে দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাশিদ।
সম্প্রতি সে দেশের এক সংবাদমাধ্যমে মলদ্বীপের পর্যটক মন্ত্রকের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে মলদ্বীপে ভারতীয় পর্যটক ছিল ৪১ হাজার ৫৪ জন। ২০২৪ সালে ২ মার্চ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ২২৪ জন। এক বছরে মলদ্বীপে ভারতীয় পর্যটক কমেছে ১৩ হাজার ৮৩০ জন। শুধু তা-ই নয়, গত বছর একই সময়ে মলদ্বীপে পর্যটন থেকে আয়ে ভারতের অবদান ছিল ১০ শতাংশ। এ বছর সেই পরিমাণ কমেছে ৪ শতাংশ।
ভারতের সঙ্গে মলদ্বীপের কূটনৈতিক সম্পর্ক ভালই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সে দেশের তিন মন্ত্রী ভারত এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দেন। তার পরই শুরু হয় ‘মলদ্বীপ বয়কট’-এর ডাক। সেই বিতর্কের মুখে পড়ে মলদ্বীপ সরকার সুর কিছুটা নরমও করেছিল। তবে পরে চিনের সঙ্গে ‘বন্ধুত্ব’ বৃদ্ধি হওয়ায় ফের সুর চড়ান সে দেশের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। মলদ্বীপের ‘জমি’ থেকে ভারতীয় সেনা সরিয়ে নিতে বলেন তিনি।
সেই নিয়ে দু’দেশের মধ্যে টানাপড়েন চলে। তবে শেষ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদী সরকার ভারতীয় সেনা সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে সেনার বদলে ভারতীয় প্রযুক্তিবিদদের মলদ্বীপে পাঠাচ্ছে ভারত সরকার। কিন্তু ‘মলদ্বীপ বয়কট’-এর ডাক সে দেশের পর্যটন শিল্পে ক্ষতি করেছে তা মেনে নিয়েছেন মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট।
ভারতীয় পর্যটক কমে যাওয়া প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে নাশিদ বলেন, ‘‘ভারতের বয়কট মলদ্বীপকে অনেক প্রভাবিত করেছে। আমি ভারতে আছি। তবে আমি মলদ্বীপ নিয়ে খুব চিন্তিত। মলদ্বীপের মানুষ ক্ষমাপ্রার্থী। আমরা দুঃখিত এমনটা ঘটেছে বলে। আমরা চাই যে, ভারতীয়েরা ছুটি কাটাতে মলদ্বীপে আসুন। আমাদের আতিথেয়তায় কোন ত্রুটি থাকবে না।’’