মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। —ফাইল চিত্র ।
বিদেশি রাষ্ট্রদূতের আদেশ মেনে কাজ করতেন তাঁর পূর্বসূরি তথা মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলি। এমনটাই দাবি করলেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি সে দেশের সামরিক ড্রোন কেনা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে এই কথা জানিয়েছেন তিনি। মুইজ্জুর দাবি, ‘‘দেশের প্রধান বিরোধী দল মলদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি) ক্ষমতায় থাকার সময় দলটি মলদ্বীপের স্বাধীনতা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশকে বিদেশির হাতে ছেড়ে দিয়েছে।’’ যদিও কোন দেশ বা রাষ্ট্রদূতের আদেশ মেনে সোলি কাজ করতেন, তা উল্লেখ করেননি মুইজ্জু। ঘটনাচক্রে, সোলি আগে থেকেই ‘ভারত-ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চের শুরুতে অর্থনৈতিক অঞ্চলে টহল দেওয়ার জন্য তুরস্কের কাছ থেকে নজরদারি ড্রোন কিনেছে মলদ্বীপ। এর পরেই বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে মুইজ্জুকে। সেই প্রসঙ্গে কথা বলার সময় মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘ক্ষমতায় থাকাকালীন সোলি এক জন বিদেশি রাষ্ট্রদূতের নির্দেশে কাজ করেছিলেন। যার ফলে দেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল।’’ মুইজ্জু আরও বলেন, “আমরা সেই সময় অর্থনৈতিক দিক-সহ সমস্ত ক্ষেত্রে স্বাধীনতা হারিয়েছিলাম। আমরা এখন সেই পরিস্থিতিতে বদল আনার চেষ্টা করছি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই তারা এই প্রচেষ্টাকে গ্রহণ করবে না।’’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সোলি ভারতের সঙ্গে ‘বৈরিতা’ মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন মুইজ্জুকে। সোলি বলেছিলেন, ‘‘আমি সংবাদমাধ্যমে দেখেছি, মুইজ্জু ভারতের কাছে ঋণমকুবের আর্জি জানিয়েছেন। কিন্তু ভারতের কাছে ঋণের কারণে মলদ্বীপে অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়নি। চিনের কাছে ১৮০০ কোটি এমভিআর (মলদ্বীপের মুদ্রা) ঋণ আছে মলদ্বীপের। ভারতের কাছে ঋণের পরিমাণ তুলনায় অনেক কম। ৮০০ কোটি এমভিআর।’’ তাঁর আমলে ভারতের সঙ্গে মলদ্বীপের সম্পর্ক ভাল ছিল। তবে তাঁকে হারিয়ে মুইজ্জু মলদ্বীপের প্রেসিডেন্টের আসনে বসার পর থেকেই একাধিক কারণে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
গত নভেম্বরে মলদ্বীপে ক্ষমতায় এসেছেন মুইজ্জু। তার পরেই তিনি সে দেশ থেকে ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে বলেন। ১০ মের মধ্যে মলদ্বীপের তিনটি বিমান ঘাঁটি থেকেই সেনা সরিয়ে নেওয়ার কথা জানান মুইজ্জু। এর মাঝেই মলদ্বীপের তিন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছিল। তাঁদের পরে সাসপেন্ডও করা হয়।