অনুমোদন পেয়ে গেলে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে আইনি স্বীকৃতি পাবে স্বেচ্ছামৃত্যু। —প্রতীকী চিত্র।
পাঁচ ঘণ্টার আবেগঘন বিতর্কের পরে ব্রিটিশ এমপিরা স্বেচ্ছামৃত্যুকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষেই ভোট দিলেন। আজ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে এই সংক্রান্ত বিলটির পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩৩০ জন, বিপক্ষে ২৭৫ জন। এর পরের ধাপে পার্লামেন্টে বিলটি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হবে। তার পরে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ, অর্থাৎ, হাউস অব লর্ডসে দ্বিতীয় দফার বিতর্কের পরে সেখানেও অনুমোদন পেয়ে গেলে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে আইনি স্বীকৃতি পাবে স্বেচ্ছামৃত্যু।
আজ সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয় বিতর্ক। প্রথম থেকেই পার্লামেন্টের পরিবেশ ছিল থমথমে। সাধারণত বিতর্কের সময়ে যে রকম চড়া সুরে তর্ক-বিতর্ক হয়, আজ তা হয়নি। অনেক এমপি-ই তাঁদের মৃত্যুপথযাত্রী কোনও আত্মীয়ের কথা বলে বিলের পক্ষে সওয়াল করেন। বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন কেউ।
বিতর্কের শুরু থেকেই ব্রিটিশ এমপিরা স্পষ্ট দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিলেন। পরে দেখা যায়, বিলের দিকেই পাল্লা ভারী। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন ও টেরেসা মে বিলটির বিরোধিতা করেন। কিন্তু আর এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন সেটির পক্ষে ভোট দেন। স্বাস্থ্যসচিব ওয়েস স্ট্রিটিং-ও বিলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। তবে দু’পক্ষই মেনে নিয়েছেন যে, আইন হলে বেশ কিছু কঠোর শর্ত রাখতে হবে। না হলে এই আইনের অপব্যবহারের প্রভূত আশঙ্কা রয়েছে।
আপাতত বিলে স্বেচ্ছামৃত্যুতে সায় দেওয়ার জন্য যে শর্তগুলি রাখা হয়েছে, সেগুলি হল—
যিনি স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করবেন তাঁর বয়স ১৮-র বেশি হতে হবে।
তাঁকে সজ্ঞান ও সচেতন থাকতে হবে।
তাঁর ছ’মাসের বেশি বাঁচার সম্ভাবনা নেই।
তাঁকে দু’জন চিকিৎসকের কাছে দু’টি পৃথক আবেদন করতে হবে এবং দু’টি আবেদনের মধ্যে অন্তত এক সপ্তাহের ফারাক থাকতে হবে।
মারণ ইঞ্জেকশন রোগীকে নিজে নিতে হবে।
এর আগে ২০০৯ সালে এক বার বিলটি পার্লামেন্টে পেশ করা হয়েছিল। কিন্তু সে বার বিলটি পাশ হয়নি।