হিমাচ্ছন্ন: জমে বরফ ট্রাফালগর স্কোয়ারের ফোয়ারা। লন্ডনে। ছবি: রয়টার্স।
বসন্তের শুরুতে প্রকৃতির তাণ্ডবে বিধ্বস্ত ব্রিটেন। পার্কে পার্কে যেখানে ড্যাফোডিল শোভা পাওয়ার কথা, সেখানে গাছগুলো এখন পুরু সাদা বরফের চাদরে ঢাকা। বন্ধ স্কুল-কলেজ। বিপর্যস্ত ট্রেন আর উড়ান পরিষেবা।
গত তিন দিনের টানা ঠান্ডা হাওয়া আর তুষার ঝড়ের জেরে গোটা ব্রিটেনেই অঘোষিত ছুটি ঘোষণা হয়েছে। আশার কথা শোনাচ্ছে না আবহাওয়া দফতরও। উল্টে আগামী সোমবার পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ড আর দক্ষিণ ওয়েলসের জন্য চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করে রেখেছে তারা। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, মূলত রাশিয়া থেকে আসা বরফ ঠান্ডা হাওয়ার জেরেই গোটা ইউরোপের তাপমাত্রা এমন হু-হু করে নামছে। আরও দু’সপ্তাহ এমন চরম ঠান্ডা চলবে বলেও সতর্ক করেছেন তাঁরা। তার উপর রয়েছে ‘এমা’ ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা। আবহবিদরা জানিয়েছেন, এমার তাণ্ডবে ব্রিটেনে ৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বরফ পড়তে পারে।
দুর্ভোগ বাড়ছে ট্রেন আর বিমানযাত্রীদের। ট্রেন চলছে দেরিতে। লন্ডনের প্যাডিংটন স্টেশন আজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। হিথরো, গ্লাসগো, গ্যাটউইক বিমানবন্দরে বাতিল হয়েছে অজস্র উড়়ান। সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখতে হয়েছিল গ্যাটউইক আর গ্লাসগো বিমানবন্দর।
এর মধ্যেই টান পড়তে চলেছে গ্যাসে। ফলে সাধারণ মানুষের বাড়িতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের আশঙ্কা থাকছে। এখানকার বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রগুলি বেশির ভাগই চলে গ্যাসের সাহায্যে। অফিস বা বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিকে বিদ্যুৎ ব্যবহার কমাতে বলা হয়েছে।
ঠান্ডার চোটে লন্ডনের ট্রাফালগর স্কোয়ারের ফোয়ারা জমে গিয়েছে। রিজেন্ট পার্কের জলও জমে বরফ। তবে ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রী বরিস জনসনকে আজ সকালেও শর্টস পরে দৌড়তে দেখা গিয়েছে। কিছু লন্ডনবাসী তো আবার হাইড পার্কের সারপেনটাইন লেকের কনকনে ঠান্ডা জলে দিব্যি সাঁতার কেটেছেন!
খারাপ আবহাওয়ার জন্য লন্ডন শহরের অনেকেই গত দু’দিন কাজে বেরোননি। বেশ কিছু অফিস তাঁদের কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে, বাড়িতে বসেই কাজ করার জন্য। কর্মীদের কাজে আসার জন্য নতুন করে নির্দেশিকা জারি করেছে বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রের অফিস। জোর দেওয়া হচ্ছে বাড়ি থেকে কাজ করে পাঠানোর উপরে। বলা হয়েছে, খারাপ আবহাওয়ার জন্য আচমকা অফিসে না এলে কর্মীদের আর্নড লিভ কাটা হবে। যাঁরা অফিসের গাড়িতে যাতায়াত করেন, তাঁদের বাড়ি পর্যন্ত গাড়ি না পৌঁছলে তবেই সেই কর্মীরা সে দিনের মতো ছুটি নিতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।