প্রাণভয়ে: পাকিস্তানে কোয়েটার এক গির্জায় হামলার পরে। রবিবার। ছবি: এএফপি।
এক সময়ে কট্টর ভারত-বিরোধিতাই ছিল তাঁর মূলধন। কিন্তু সেনাপ্রধান থেকে দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে সেই অবস্থান কিছুটা বদলেছিলেন পারভেজ মুশারফ। কিন্তু ফের ভেসে উঠতে তিনি ফের পুরনো ভারত-বিরোধী অবস্থানেই ফিরছেন। সে জন্য ভারত-বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে হাত মেলানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন।
মুশারফের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ মামলা চলছে পাক আদালতে। এই অবস্থায় প্রায় এক দশক ধরে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা মুশারফ আজ একটি পাক চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘লস্কর ও জামাত উদ দাওয়ার সমর্থকেরা সবচেয়ে বড় দেশভক্ত। তারা কাশ্মীরে পাকিস্তানের জন্য প্রাণ দিয়েছে। ওরা এখনও আমায় কোনও প্রস্তাব দেয়নি। কিন্তু প্রস্তাব এলে আমার কোনও আপত্তি নেই।’’ লস্কর প্রধান হাফিজ সইদ সম্প্রতি গৃহবন্দি দশা থেকে মুক্তি পেয়েই জানিয়েছেন, তিনি আগামী পাক নির্বাচনে লড়তে ইচ্ছুক। তাঁর সংগঠন জামাত উদ দাওয়া সম্প্রতি ‘মিল্লি মুসলিম লিগ’ নামে রাজনৈতিক দলও গড়েছে। মুশারফ নিজেও পাক রাজনীতিতে ভেসে উঠতে মরিয়া। এই অবস্থায় দু’পক্ষ হাত মেলালে কী হবে, সেটাই ভারতের কাছে চিন্তার। সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে গত কাল বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসকে মনে করিয়ে হাফিজ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের বদলা নিতে কাশ্মীরকে ভারত থেকে আলাদা করবই।’’
ভারতীয় গোয়েন্দাদের মতে, মুশারফের সঙ্গে পাক মৌলবাদীদের সম্পর্ক বহু পুরনো। তিনি সেনাপ্রধান থাকাকালীনই কার্গিলে পাক জঙ্গিরা পাক সেনার সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে হামলা চালিয়েছিল। মুশারফ প্রেসিডেন্ট থাকাকালীনই ভারতীয় সংসদে হামলা হয়। আমেরিকার ভূমিকাও ভারতীয় কূটনীতিকদের চিন্তার কারণ। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানের উপরে চাপ বাড়ালেও কাজের কাজ সে ভাবে কিছুই হয়নি।
পাক মৌলবাদীদের এই উত্থানে সে দেশের নাগরিক সমাজের বড় অংশ উদ্বিগ্ন। তাদের মতে, মৌলবাদী তাসকে ব্যবহার করতে গিয়ে পাকিস্তান ক্রমশই মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। পাকিস্তানেও একের পর এক জঙ্গি হামলা হচ্ছে। আজও কোয়েটার এক চার্চে জঙ্গি হামলায় ৮ জন নিহত হয়েছেন।