ভোজসভা: রবিবার এই ছবিই প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়া।
ছ’নম্বর পরমাণু পরীক্ষাটাও হয়ে গিয়েছে। তরতর করে পরমাণু অস্ত্র-প্রকল্পে এগিয়ে যাচ্ছে কিমের দেশ। যে কোনও মুহূর্তে আমেরিকার দিকে কোনও একটা ভয়ানক অস্ত্র ছুড়ে দেওয়াই যায়। তা হলে আর ‘আনন্দোৎসবটা’ বাকি থাকে কেন! দেশের এত সাফল্যের পিছনে যাঁরা, সেই পরমাণু বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানাতে ঢাকঢোল পিটিয়ে মহানন্দে মেতেছিলেন শাসক কিম জং উন। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম রবিবার সে ছবি প্রকাশও করেছে।
উৎসবটা ঠিক কবে হয়েছে, তা অবশ্য জানানো হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, গত কাল উত্তর কোরিয়ার স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের ৬৯তম বার্ষিকী ছিল। তাই ওই দিনটাই উদ্যাপনের জন্য কিমের কাছে আদর্শ। সম্ভবত শনিবারই এই অনুষ্ঠান এবং ভোজসভা হয়েছে। যেখানে হাজির ছিলেন দেশের বাছা বাছা পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ অফিসাররা। এঁরা প্রত্যেকেই গত রবিবারের হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে যুক্ত ছিলেন। অনুষ্ঠানে খানাপিনা
ছাড়া দেশের শাসকের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার ‘সৌভাগ্য’ও হয়েছে সেরা বিজ্ঞানীদের!
আরও পড়ুন: দিনভর রক্তচক্ষু কিমের
উত্তর কোরিয়ার পিপলস থিয়েটারে সেই ছবিতে চওড়া হাসির কিমের পাশে দেখা গিয়েছে দেশের পরমাণু অস্ত্র সংস্থার প্রধান রি হং সপ এবং শাসক দলের সামরিক অস্ত্র বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর হং সাং মু-কে। রি এবং হং-কে এর আগেও বিভিন্ন পরমাণু পরীক্ষায় সময় কিমের যথেষ্ট কাছাকাছি দেখা গিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সংবাদ সংস্থার বয়ান অনুযায়ী, ‘সফল ভাবে হাই়ড্রোজেন বোমা পরীক্ষা করে দেশের ইতিহাসে অসাধারণ মুহূর্ত তৈরি করেছেন এই বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদের দল।’ কিমও তাঁদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। কিমের কথায়, ‘‘কোরীয় জনতার রক্তজল করা পরিশ্রমে এই সাফল্য এসেছে।’’
উত্তর কোরিয়ার বাইরে অবশ্য রি এবং হং যথেচ্ছ সমালোচনার মুখে পড়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং দক্ষিণ কোরিয়া ইতিমধ্যেই তাঁদের কালো তালিকাভুক্ত করেছে।
গত শনিবার ওই বিশেষ দিনে উত্তর কোরিয়া চুপচাপ বসে থাকবে— এমনটা তাদের প্রতিবেশী দেশ দক্ষিণ কোরিয়াও ভাবেনি। তারা বরং আগাম সঙ্কেত দিয়েছিল, সে দিন ফের আন্তমর্হাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষা করতে
পারে কিমের দেশ। আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশ তাই চিন্তায় ছিল। তবে সে দিকে না হেঁটে উৎসবেই ক্ষান্ত দিয়েছেন কিম।
পরমাণু অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কিমের বাড়াবাড়ি ঠেকাতে উত্তর কোরিয়ার উপরে নয়া নিষেধাজ্ঞা চাপানোর জন্য ওয়াশিংটন অবশ্য গত শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে জানিয়েছিল, সোমবারে এ নিয়ে বৈঠক ডাকা হোক। জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইতসুনোরি ওনোদেরার মুখেও রবিবার শোনা গিয়েছে একই কথা, ‘‘আমরা চাপ না বাড়ালে উত্তর কোরিয়া দিক পরিবর্তন করবে না।’’