চোখ মুছছেন কিম জং উন। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।
এক ঝলক দেখলে বোঝাই যাবে না, তিনি কত ভয়ানক কাণ্ড ঘটাতে পারেন! গোলগাল চেহারা, টলটলে গালের কিম জং উনের মুখে সবসময় লেগে থাকে শিশুর সারল্য। তবু এই মানুষটার ভয়েই কাঁটা হয়ে থাকেন উত্তর কোরিয়ার মানুষ। কারণ তাঁরা জানেন, এঁর কোপে পড়লে টিকে থাকা মুশকিল। এঁর শাসনে থাকলে যে কোনও মুহূর্তে জেলে যাওয়া নিশ্চিত। আর এক বার জেলে গেলে ফিরে আসার সম্ভাবনা প্রায় নেই। সমালোচকেরা বলেন, হিটলার, মুসোলিনির মতো এই ভয়ই কিমের দেশশাসনের মন্ত্র। আর সেই কিমের চোখে কিনা জল!
গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তর কোরিয়ার একনায়কের কান্নার ছবি এবং ভিডিয়ো। সেই কান্নাও গোপন নয়। প্রকাশ্য সভায় হাজার হাজার মহিলা দর্শকের মাঝে বসে বার বার চোখ ঝাপসা হচ্ছে কিমের। টলটলে ফোলা গাল বেয়ে গড়িয়েই চলেছে জল। মাথা হেঁট করে সেই জল সামলাতে চাইছেন কিম। কেউ যাতে বুঝতে না পারে, তাই গালে হাত বুলোনোর ঢঙে মুছে নিচ্ছেন জল। একটা সময়ের পর অবশ্য আর আঙুলে কাজ হয় না। নিতেই হয় রুমালের সাহায্য। মুখ আরও নামিয়ে রুমালে চোখ মোছেন উত্তর কোরিয়ার একনায়ক। এই দৃশ্যের ভিডিয়োই ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু কেন কাঁদছেন কিম?
কোরিয়ান সেন্ট্রাল টেলিভিশন জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে উত্তর কোরিয়ার মায়েদের নিয়ে ডাকা একটি বৈঠকে। পিয়ং ইয়ংয়ে বৈঠকটি ডেকেছিলেন উত্তর কোরিয়ার একনায়কই। সম্প্রতিই উত্তর কোরিয়ার শিশুদের জন্মের হার কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। সে ব্যাপারেই দেশের মায়েদের সাহায্য চেয়েছেন কিম। আরও সন্তান প্রসবের আর্জি জানিয়ে বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার মায়েদের কিম বলেন, ‘‘দেশের জন্মের হার বৃদ্ধির স্বার্থে মায়েদের সাহায্যের দরকার আমাদের।’’ শুধু তা-ই নয় দেশের জাতীয় শক্তিকে মায়েরাই শক্তিশালী করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। আর একই সঙ্গে এটাও জানাতে চাই, আমিও যখন কোনও সমস্যায় পড়ি, তখন আমারও প্রথমে মায়ের কথাই মনে পড়ে।’’
প্রসঙ্গত, গত এক বছরের হিসাব বলছে, উত্তর কোরিয়ায় জন্মের হার ১.৮ শতাংশে এসে ঠেকেছে। উত্তর কোরিয়ায় এখন মোট জনসংখ্যা দু’কোটি ৫০ লক্ষ। এই দেশ দীর্ঘ দিন খাদ্যাভাবের সমস্যার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে।