কুলভূষণ সুধীর যাদব
কুলভূষণ সুধীর যাদব। ভারতীয় নৌসেনার এই প্রাক্তন অফিসারের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করল পাক সেনা। তাদের দাবি, মহারাষ্ট্রের সাংলির বাসিন্দা কুলভূষণ ওরফে হুসেন মুবারক পটেল ভারতের ‘র’-এর হয়ে চরবৃত্তি এবং বালুচিস্তান ও করাচিতে নাশকতায় জড়িত থাকার কথা কবুল করেছেন আগেই। তার ভিত্তিতে ‘ফিল্ড জেনারেল কোর্ট মার্শাল’ আজ এই রায় দিয়েছে। যদিও কখন ও কোথায় যে এই বিচার হলো, ভারত তার বিন্দুবিসর্গও জানতে পারেনি বলে সরকারি সূত্রের দাবি।
ভারত দ্রুত ও কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এর। বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত আবদুল বাসিতকে তলব করে কঠোর ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, এই দণ্ড কার্যকর করা হলে ভারত সেটাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত হত্যা’ বলে গণ্য করবে। কারণ কুলভূষণের বিরুদ্ধে নির্ভরযোগ্য কোনও প্রমাণ নেই। বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে।
নৌসেনার এই প্রাক্তন অফিসারের ইরানে ছোটখাটো ব্যবসা ছিল। সেই সূত্রে যাতায়াত ছিল পাকিস্তানে। গত বছর মার্চে বালুচিস্তানে আফগানিস্তান সীমান্তের লাগোয়া এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। পরে নিয়ে যাওয়া হয় ইসলামাবাদে। মাঝে একটি বারও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি ইসলামাবাদের ভারতীয় দূতাবাসকে। ভারত বারবার এ ব্যাপারে অনুরোধ করা সত্ত্বেও তা খারিজ করেছে পাকিস্তান। আর আজ এক বছর পরে পাক সেনার প্রচার শাখা ‘ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনস এক বিবৃতিতে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের কথা জানাল।
যে পাকিস্তান ওসামা বিন লাদেন থেকে দাউদ ইব্রাহিমদের নিরাপদ আশ্রয় জুগিয়েছে, যেখানে মাসুদ আজহার, হাফিজ সইদের মতো সন্ত্রাসবাদীরা অবাধে তাদের কাজকর্ম চালিয়ে যায়, সে দেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে ভারত-সহ বিশ্বের অনেক দেশই প্রশ্ন তুলে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এরই মধ্যে পাক সামরিক আইনে কুলভূষণের প্রাণদণ্ড ‘ক্যাঙ্গারু আদালতের বিচার’ বলেই দাবি করছে ভারতের সংবাদমাধ্যম। কুলভূষণের আইনি অধিকার কেড়ে নিয়ে পাক সেনা যে ভাবে বিচারকে প্রহসনে পরিণত করেছে, তার কড়া নিন্দা করেছে আ্যমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
কূটনীতিকরা বলছেন, এখনই কূলভূষণের প্রাণদণ্ড না হলেও, এই রায় দু’দেশের মধ্যে তিক্ততা বাড়াবে আরও। কথা ছিল পরশুই ১২ জন পাক কয়েদিকে মুক্তি দেবে নয়াদিল্লি। আপাতত স্থগিত হয়েছে তা।