Jeff Bezos

space expediting: মেয়েরা অর্ধেক আকাশ, বুঝলেন ৬০ বছর পরে

অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের তিন সহযাত্রীর মধ্যে অন্যতম ছিলেন ওয়ালি ফাঙ্ক, ৮২ বছর বয়সে তিনি জন গ্লেনের রেকর্ড ভেঙে হলেন প্রবীণতম মহাকাশ অভিযাত্রী।

Advertisement

মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়

বস্টন শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২১ ০৬:১২
Share:

স্বপ্নপূরণ: মহাকাশ সফরের পরে ওয়ালি ফাঙ্ক। মঙ্গলবার। (বাঁ দিকে) ষাটের দশকে ওয়ালি। রয়টার্স

অর্ধেক পৃথিবী এখনও অতিমারির সঙ্গে লড়াই করে চলেছে। বহু দেশের অর্থনীতি প্রায় ভাঙনের মুখে। এক দেশ থেকে অন্য দেশ যাওয়া এখনও কঠিন। কিন্তু এ সবের অন্য প্রান্তে চলছে মানুষের ‘মহাকাশ ভ্রমণের’ তোড়জোড়। গত ন’দিনের মধ্যে দুই ধনকুবের রিচার্ড ব্র্যানসন এবং জেফ বেজোস তাঁদের ‘নিজস্ব’ মহাকাশযানে ঘুরে এলেন মহাকাশের প্রান্ত থেকে। এ কি মহাকাশ ভ্রমণ, নাকি ভ্রমণের ভবিষ্যৎ?

Advertisement

অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের তিন সহযাত্রীর মধ্যে অন্যতম ছিলেন ওয়ালি ফাঙ্ক, ৮২ বছর বয়সে তিনি জন গ্লেনের রেকর্ড ভেঙে হলেন প্রবীণতম মহাকাশ অভিযাত্রী। ১৯৬১ সালে ওয়ালি ডাক পান নাসা থেকে, ‘মার্কারি ১৩’ মহাকাশ মিশনে অংশ নেওয়ার জন্য। এই মিশনেই নাসা প্রথম মহিলা মহাকাশচারীদের কথা ভাবছিল। তার আগেই মিলিটারি পাইলট হিসেবে যথেষ্ট ‘উড়ান-ঘণ্টা’ অর্জন করেছেন ফাঙ্ক। সেটা এমন একটা সময়ের কথা, যখন আমেরিকায় মহিলারা স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাড়ির মর্টগেজে সই করতে বা ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারতেন না। কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের তখন নার্স, রিসেপশনিস্ট বা শিক্ষিকা ছাড়া অন্য কোনও ভূমিকায় ভাবাই হত না!

মহিলাদের শরীর মহাকাশে কী ভাবে, কতটা মানিয়ে নিতে পারে তার অনেক রকম পরীক্ষার আয়োজন করেছিল নাসা। সাড়ে দশ ঘণ্টা অত্যন্ত কষ্টদায়ক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে দেখা যায়, শারীরিক সক্ষমতায় ওয়ালি নারী-পুরুষের সম্মিলিত তালিকায় ছিলেন যথেষ্ট উপরের দিকে। কিন্তু বয়সে তিনি ছিলেন সকলের থেকে ছোট। মহাকাশে তাঁর যাওয়া হয়নি কারণ ‘মার্কারি ১৩’ মিশনটাই বাতিল হয়ে যায়। তার পরেও চারবার নাসার বিভিন্ন মিশনে আবেদন করেছিলেন ফাঙ্ক। নাসা তাঁকে ফিরিয়ে দেয় তাঁর ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নেই বলে।

Advertisement

ওয়ালি তাঁর জীবনে সে পথই সব সময়ে বেছে নিয়েছেন, যেখানে পা রাখতে মানুষ ভয় পায়। তাঁর পথ ছিল আকাশ। ১৯ হাজার ৬০০ ঘণ্টা প্লেন চালিয়েছেন। তিন হাজারেরও বেশি মানুষকে প্লেন চালানো শিখিয়েছেন। এমন কোনও ধরনের প্রাইভেট বা কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স নেই, যা ওয়ালির ছিল না। তাঁর কর্মশক্তি ও উৎসাহ তরুণদেরও লজ্জা দেবে। শুধু মহাকাশেই যাওয়া হয়নি এত দিন। ৮২ বছর বয়সে, তাঁর একমাত্র অধরা উড়ান-স্বপ্ন, অবশেষে সফল হল।

‘ব্লু অরিজিন’ হয়তো ভবিষ্যতে অনেক ধনকুবেরের মহাকাশ ভ্রমণের স্বপ্ন সফল করবে। কিন্তু তার প্রথম যাত্রার সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থাকবেন বিরাশি বছরের ‘তরুণী’ ওয়ালি ফাঙ্ক, অসম্ভব কথাটা যাঁর অভিধানে লেখা নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement