প্রায় ২২ কোটি টাকা খরচ করে একটি বিশালাকার টুনা মাছ কিনলেন জাপানের এক ব্যবসায়ী। জাপানের উত্তর উপকূলে কিছু দিন আগেই বিপন্ন প্রজাতির এই মাছটি ধরা পড়ে। তোয়োসু নামক টোকিওর একটি মাছের বাজারে নতুন বছরেই নিলামে উঠেছিল ২৭৮ কেজির এই মাছটি।
জাপানের ওই ব্যবসায়ীর নাম কিয়োশি কিমুরা। এর আগেও ২০১৩ সালে এরকমই একটি ‘কিং টুনা’ কিনে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন কিয়োশি। সে সময়ে তিনি প্রায় ১০ কোটি টাকা দিয়ে মাছটি কিনেছিলেন।
টোকিওর সুকিজিতেই একটি রেস্তরাঁ চালান ব্যবসায়ী কিয়োশি কিমুরা। নিলামের পর বললেন, ‘‘এটাই সেরা টুনা। তবে, আমি যে দামটা ভেবেছিলাম, তার থেকে এর দাম অনেক বেশি। যাই হোক, আমাদের রেস্তরাঁর কাস্টমাররা খুব ভাল একটা টুনা মাছ খেতে পারবেন।’’
তোয়োসুর আগে সুকিজিতেই হত মাছের নিলাম। আগুন, পরিবেশগত আরও নানান কারণে বাজারটি সরিয়ে তোয়োসুতে আনা হয়।
সুকিজি বিশ্বের নামকরা মাছের বাজারগুলির একটি। ব্যস্ত এই মাছের বাজারকে ঘিরে রয়েছে একাধিক রেস্তরাঁ। এলাকায় ঢুঁ মারলেই কানে আসবে মাছের দর কষাকষির আওয়াজ। সুকিজি এখন পর্যটকদেরও ঘুরতে যাওয়ার জায়গা হয়ে গিয়েছে।
১৯৩৫ সাল থেকেই এই সুকিজিতে মাছের বাজারে টুনা মাছ নিলামে ওঠে। এক্কেবারে নামী সুশি রেস্তরাঁর শেফ থেকে একদম ছাপোষা মৎস্য ব্যবসায়ী সকলেই মাছ বিকিকিনি করেন এখানে। বিশেষ করে বছরের শুরুতে নিলাম হয় দেখার মতো। দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষ জড়ো হন টুনা মাছ কিনতে।
ভোর হওয়ার আগেই রবারের বুট পরে বরফ ঢাকা টুনা মাছ পরখ করতে আসেন ব্যবসায়ীরা। ঘড়ির কাঁটায় ভোর ৫টা ১০ হলেই নিলাম শুরু হওয়ার ঘণ্টা বাজতে শুরু করে।
এই ব্লু ফিন টুনা মাছের ব্যবসা করে একটা বিরাট অংশের দিন গুজরান হয় জাপানে। জাপান, বিশেষত সুকিজির বাসিন্দারা টুনা মাছকে বলেন ‘কুরো মাগুরো’। তবে আজকাল জাপানেও এই টুনা মাছের অভাব। আর সেই কারণেই রেস্তরাঁগুলিতে টুনা মাছকে বলা হয় ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’।
টুনা মাছের বিখ্যাত একটি পদ ‘ওটোরো’। মাছের পেটের অংশ দিয়ে তৈরি হয় সুস্বাদু এই পদ। বিপুল দামে টোকিওর রেস্তরাঁগুলিতে বিক্রি হয় ‘ওটোরো’।
সুকিজির পাশাপাশি তোয়োসু বাজারেও শুরু হয়ে গিয়েছে নিলাম। সে বাজারের মালিক ইয়োশিহিকো ওটাকি বললেন, ‘‘নতুন বছরে টুনা মাছের নিলাম শুরু হয় এই তোয়োসু মার্কেট থেকেই। সুকিজির মতো এখানেও টুনা মাছের রমরমা বাজার।’’
টোকিওর গভর্নর ইউরিকো কৈকের কথায়, “আমার মনে হয় এই বাজারও বহু মানুষের পছন্দ হবে।’’