লিউ শিয়াওবো
পৃথিবী জুড়ে লেখক-সমাজকর্মীরা এত দিন ধরে তাঁর মুক্তির জন্য দাবি জানিয়ে এসেছেন। লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত যকৃতে মারণ ক্যানসার তাঁকে সেই মুক্তি দিল। জেল থেকে বেরোলেন চিনের নোবেলজয়ী প্রতিবাদী লেখক এবং মানবাধিকার কর্মী লিউ শিয়াওবো।
কমিউনিস্ট পার্টির একাধিপত্যে থাকা চিনে গণতন্ত্রের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন ৬১ বছরের লিউ। ২০০৯ সালে তাঁকে এগারো বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এখনও তিন বছরের মেয়াদ বাকি। জেলবন্দি অবস্থাতেই নোবেল শান্তি পান লিউ। নরওয়ের অসলো-য় পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে লিউ-এর প্রতিনিধিত্ব করেছিল একটি ফাঁকা চেয়ার।
লিউ-এর আইনজীবী সোমবার জানিয়েছেন, মে মাসেই ধরা পড়েছে মারণ রোগ। চিকিৎসার জন্যই প্যারোলে মুক্তি মিলেছে। এখন শেনইয়াংয়ের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন লিউ।
চিনা সাহিত্য ডক্টরেট করে লিউ কর্মজীবন শুরু করেছিলেন বেজিংয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৮৯ সালে তিয়েনআনমেন স্কোয়ার আন্দোলনে ধৃত ছাত্রদের মুক্তির দাবিতে সরব হওয়ায় প্রথমবার তিনি জেলে যান। দু’বছর পরে মুক্তি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর অধিকার হারালেন। কিন্তু ছাত্রমুক্তির দাবিতে আন্দোলন ছাড়লেন না লিউ। ১৯৯৬-৯৯ তাঁকে পাঠানো হল শ্রমশিবিরে। লিউ তাতেও দমবার পাত্র নন। ২০০৮ সালে গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে তিনি লিখলেন ‘সনদ ০৮’। চিনে তাঁর লেখালেখির উপরে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সনদটি প্রকাশ করলেন অনলাইন। লিউকে তখনই ফের জেলে পোরা হল। ২০১০ থেকে গৃহবন্দি করে দেওয়া হল তাঁর স্ত্রীকেও।
লিউ-এর নোবেলপ্রাপ্তিতে মোটেই খুশি হয়নি চিন সরকার। তারা মনে করেছিল, চিনের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে হীন চোখে দেখানোর জন্যই পুরস্কৃত করা হল লিউ-কে। এ দিন লিউ-এর মুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিষয়টি এড়িয়ে যান।