বিস্ফোরণের পর আফগানিস্তানের মসজিদ। ছবি—পিটিআই।
আফগানিস্তানের মসজিদে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করল ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তারা জানিয়েছে, এক উইঘুর এই আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে। নিজেদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে তারা লিখেছে, ‘মুহম্মদ আল-উইঘুরি নামে তাদের এক আত্মঘাতী জঙ্গি বিস্ফোরক ঠাসা জ্যাকেট পরে ভিড়ের মধ্যে ওই হামলা চালিয়েছে।’
আফগানিস্তানের কুন্দুজ প্রদেশের খান আবাদ জেলার একটি মসজিদে বিস্ফোরণের জেরে নিহত হয়েছেন শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা। শুক্রবার বিকেলের প্রার্থনার সময় ওই বিস্ফোরণ ঘটে। জখম অন্তত আরও একশো জন। রাতে এই হামলার দায় নিয়েছে আইএস। ওই ঘটনার পরে তালিবানের মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ টুইটে লেখেন, ‘বিকেলে শিয়া সম্প্রদায়ের একটি মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটেছে। আমাদের অনেকে নিহত হয়েছেন। জখমও বহু।’
ঘটনাস্থলের প্রচুর ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়েছে নেটমাধ্যমে। সেগুলিতে দেখা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের পরে আতঙ্কিত মানুষ হুড়োহুড়ি করছেন। দৌড়চ্ছেন। রাস্তার ধারে বুক চাপড়ে কাঁদছেন কেউ কেউ। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, হাসপাতালে রক্তাক্তদের নিয়ে ভিড় করেছেন স্বজনেরা। বিস্ফোরণ স্থলের কাছেই থাকেন ব্যবসায়ী জালমাই আলোকজাই। আহতদের চিকিৎসায় যদি রক্ত দিতে হয় সে কথা ভেবে ছুটে গিয়েছিলেন কাছের হাসপাতালে। ফিরে এসে সাংবাদিকদের বললেন, ‘‘একের পর এক অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতালে ঢুকছে আর বেরোচ্ছে। কোনওটায় রক্তাক্ত জখমেরা, কোনওটায় বা দেহের সারি। কোনও দেহের হাত নেই, পা উড়ে গিয়েছে, কোনওটা এত ক্ষতিগ্রস্ত যে চেনার উপায় নেই।’’
পেশায় শিক্ষিকা এক তরুণী বললেন, ‘‘আমার দুই প্রতিবেশীর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এক জনের বয়স মাত্র ষোলো। ওর দেহের অর্ধেকটাই পাওয়া যায়নি।’’ বিকেলে প্রার্থনার সময়ে ওই মসজিদে গিয়েছিলেন আমিনুল্লার ভাই। আমিনুল্লা বলেছেন, ‘‘বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ভাইকে ফোন করি। কিন্তু ফোন ধরছে না দেখে দৌড়ে গেলাম মসজিদে। ওখানে গিয়ে দেখি ভাই অচেতন অবস্থায় পড়ে। বরাতজোরে ওকে বাঁচিয়ে এনেছি।’’ আফগানিস্তানে সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায়কে নিশানা করে আগেও বহু বার হামলা হয়েছে। আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতায় আসার পরে কাবুল-সহ গোটা দেশে হামলা চালিয়েছে আইএস।