নৃশংসতার সীমা বলে কি কিছু হয়?
সন্দেহ জাগাচ্ছে আইএস!
ইন্টারনেটে যে সব ভিডিও প্রকাশ করছে পশ্চিম এশিয়ার এই জঙ্গি সংগঠন, সেগুলির প্রতিটিতেই যেন আগের নৃশংসতাকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা। এত দিন প্রকাশিত হত বন্দিদের গুলি করে মারা বা গলা কেটে দেওয়ার দৃশ্য। এ বার শিশুদের হাতে বন্দুক আর ছুরি তুলে দিয়ে, তাদের মাধ্যমে খুন করানোর ভিডিও প্রকাশ করল আইএস।
আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও রাশিয়ার লাগাতার আক্রমণে বিধ্বস্ত আইএস এখন মৃত সৈনিকদের শূন্যস্থান পূরণ করছে এই শিশুদের দিয়ে। ১০ বছর বয়সের ছেলেকেও নিয়োগ করা হচ্ছে জিহাদের সৈনিক হিসেবে। এই নাবালকরা যে স্বেচ্ছায় বা অভিভাবকের ইচ্ছায় আইএস-এ যোগ দিচ্ছে, তেমন ভাবার কোনও কারণ নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এই শিশুদের। তার পর তাদের আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
নির্বিকার ভাবে মানুষ খুনের উপযুক্ত করে তুলতে এই নাবালকদের দিয়ে খুন করানো হচ্ছে বন্দিদের। মানুষ মারায় শিশুদের হাত পাকানোর সেই দৃশ্যের ভিডিও রেকর্ডিং করে তা ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছে আইএস। তাতে দেখা যাচ্ছে, বছর দশেক বয়সের ছ’জন শিশুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিরীয় বন্দিদের খুন করার। ছ’জনের মধ্যে পাঁচ জন স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালিয়ে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে বন্দিদের। ষষ্ঠ বালক ধারালো ছুরি দিয়ে সিরীয় বন্দির গলা কেটে ফেলছে।
শৈশবকে হিংসা আর নৃশংসতায় ডুবিয়ে দেওয়ার এই ভয়ঙ্কর ভিডিও-র সমালোচনায় মুখর গোটা বিশ্ব। তবে আইএস-এর বাহিনীতে শিশুদের নিয়োগ তার জন্য বন্ধ থাকছে না। মার্কিন বাহিনীর সেন্ট্রাল কম্যান্ডের কর্তা প্যাট রাইডার জানালেন, ন্যাটো’র আক্রমণে আইএস-এর যে হারে ক্ষতি হচ্ছে, সেই হারে লোক নিয়োগ করা তাদের পক্ষে অসম্ভব। তাই শিশু আর নাবালকদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে তারা শূন্যস্থান পূরণের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। মার্কিন বোমায় রোজ কত জনের মৃত্যু হচ্ছে, তার হিসেব ওয়াশিংটন এখন প্রকাশ করে না। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় আমেরিকা রোজ ঘোষণা করত, মার্কিন হামলায় কত জনের মৃত্যু হল। যুদ্ধে নিজেদের অগ্রগতি বোঝানোর জন্য লাশের হিসেব দেওয়ার সেই মার্কিন অভ্যাস সে সময় বিশ্বব্যাপী নিন্দিত হয়েছিল। তাই এখন দৈনন্দিন শত্রুনিধন রিপোর্ট আর প্রকাশিত হয় না। কিন্তু পেন্টাগন সূত্রের খবর, লাগাতার মার্কিন হামলায় ইতিমধ্যেই কমপক্ষে ২৩ হাজার আইএস জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। সেই সংখ্যা ৩৩ হাজারও হতে পারে। এই বিপুল শূন্যস্থান পূরণে কিশোর, নাবালক, শিশু— কাউকেই বাদ দিচ্ছে না বাগদাদির দলবল।