International News

আইএস এঁর মাথার দাম রেখেছে ১০ লক্ষ ডলার

কেউ কেউ তাঁকে জোয়ান অব ইরাক বলে থাকেন। জোয়ানা পালানি। ফ্রান্সের একশো বছরের যুদ্ধের কিংবদন্তি নায়িকা জোয়ান অব আর্কের সঙ্গে তাঁর নামেও যেমন মিল, তেমনি মিল রণাঙ্গনে সাহসিনী ভূমিকাতেও। কুর্দ বাহিনীতে যোগ দিয়ে ইরাক, সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন মাত্র একুশ বছর বয়সে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৬:৩৪
Share:

কেউ কেউ তাঁকে জোয়ান অব ইরাক বলে থাকেন। জোয়ানা পালানি। ফ্রান্সের একশো বছরের যুদ্ধের কিংবদন্তি নায়িকা জোয়ান অব আর্কের সঙ্গে তাঁর নামেও যেমন মিল, তেমনি মিল রণাঙ্গনে সাহসিনী ভূমিকাতেও। কুর্দ বাহিনীতে যোগ দিয়ে ইরাক, সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন মাত্র একুশ বছর বয়সে। সেই জোয়ানার মাথার দাম ঘোষণা করল ইসলামিক স্টেট (আইএস)। জোয়ানাকে হত্যা করলেই মিলবে ১০ লক্ষ মার্কিন ডলারের ইনাম। আরব মিডিয়ায় এমনই ঘোষণা করেছে আইএস। তবে এই মুহূর্তে জোয়ানা রণাঙ্গন থেকে অনেক দূরে। ডেনমার্কের জেলে বন্দি। সে প্রসঙ্গে আসার আগে তাঁর জীবনের গোড়ার কিছু কথা জেনে নেওয়া যাক।

Advertisement

আরও দেখুন

কে এই জোয়ানা পালানি? দেখে নিন

Advertisement

১৯৯৩-তে ইরাকের রামাদিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি শরণার্থ শিবিরে জন্ম হয় ইরানিয়ান-কুর্দ জোয়ানার। তার আগে কুয়েতকে কেন্দ্র করে ইরাকের উপর দিয়ে বয়ে গেছে প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের ঝড়। জোয়ানার বাবা আর ঠাকুরদা ছিলেন কুর্দ বাহিনী পেশমেরগারের যোদ্ধা। জোয়ানার জন্মের পর তার পরিবার দেশ ছেড়ে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে আশ্রয় নেয়। আশ্রয়শিবিরে যখন এসে পৌঁছয় ছোট্ট জোয়ানা, তখন সে সবে হাঁটতে শিখেছে। তার পর ডেনমার্কেই বড় হওয়া। সেখানকারই নাগরিকত্ব। কোপেনহেগেনের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি ও দর্শন নিয়ে পড়াশোনা শুরু। কিন্তু ২০১৪-তে উচ্চশিক্ষায় ইতি টেনে আচমকাই হাতে তুলে নেন বন্দুক। চলে যান সিরিয়ায়। প্রথমে সিরিয়ায়, পরে ইরাকের মাটিতে আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে শুরু হয় তাঁর লড়াই। সেই লড়াইয়ের কথা, ছবি নিজেই ছড়িয়ে দিতে থাকেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এক দিকে অস্ত্র হাতে, অন্য দিকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কের পোস্টে চলতে থাকে আইএস-এর বিরুদ্ধে জেহাদ। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে স্বচ্ছন্দ জোয়ানার নানা ছবি প্রায়শই ভেসে উঠেছে ফেসবুক-টুইটার-ইনস্টাগ্রামে। রীতিমতো নজরকাড়া সুন্দরী জোয়ানার নানা পোজের ছবিতে সরগরম হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা। তার মাধ্যমেই নিজের কথা ছড়িয়ে দিয়েছেন দুনিয়ার নানা প্রান্তে। আইএসের বিরুদ্ধে জেহাদে এই মাধ্যমকে সুচতুর ভাবে ব্যবহার করেছেন তিনি।

আইএস বিরোধী যুদ্ধে ‘ছুটি’ নিয়ে গত বছর ফিরেছিলেন ডেনমার্কে। লক্ষ্য ছিল কিছু দিন পর আবার ফিরবেন ইরাকে, সিরিয়ায়। কিন্তু বাদ সাধল ডেনমার্ক সরকার। ইউরোপে বেলজিয়ামের পর ডেনমার্কই হল সেই দেশ, যেখান থেকে সবচেয়ে বেশি তরুণ-তরুণী দেশ ছেড়ে গিয়ে আইএস-এ যোগ দেন। এটা আটকাতে কড়া আইন আনা হয়েছে সেখানে। সেই আইনেই জোয়ানার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে। বলা হয়, এক বছরের মধ্যে দেশ ছেড়ে কোথাও যেতে পারবেন না জোয়ানা। সেই নির্দেশ ভেঙেই গত ছ’মাস জেলে কাটাতে হচ্ছে তাঁকে। এ বছর জুন মাসে লুকিয়ে কাতারে যান। ফিরেই ধরা পড়ে জেলে।

জোয়ানার আইনজীবী এরবিল কায়া অবশ্য ডেনমার্ক প্রশাসনের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ এনেছেন। বলেছেন “এটা খুব লজ্জার একটা ঘটনা। যে আইএসের বিরুদ্ধে ডেনমার্ক সহ গোটা বিশ্ব-জোট লড়ছে, সেই আইএসের বিরুদ্ধেই লড়তে যাওয়া এক জনকে শাস্তি দিচ্ছে আমাদের দেশ। আর কোথাও এমনটা ঘটেনি।” দোষী সাব্যস্ত হলে জোয়ানার দু’বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement