ইরানের ইসফাহান প্রদেশের ফুলাদশহরের রাস্তায় জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে খোমেইনির নামাঙ্কিত একটি ফলক। ছবি রয়টার্স।
হিজাব বিতর্কে উত্তপ্ত ইরান। মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরে তিন মাস কেটে গিয়েছে, এখনও অগ্নিগর্ভ দেশ। গত কাল ইরানের ২৩টি শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচ জন প্রাণ হারিয়েছেন। কাল রাতে খোমেইন শহরে প্রাক্তন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা রুহোল্লা খোমেইনির বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। বাড়িটি এখন একটি সংগ্রহশালা। বিক্ষুব্ধরা ওই বাড়ি লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা ছোড়েন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিয়ো ছড়িয়েছে। দেখা গিয়েছে, দেশের ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীরা গর্জে উঠেন, ‘‘এ বছর রক্তপাতের বছর, সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনেইকে সরতেই হবে।’’
মাস তিনেক আগে হিজাব ঠিকমতো না পরার অভিযোগে মাহসা আমিনি নামে এক ইরানি তরুণীকে গ্রেফতার করেছিল সে দেশের নীতি-পুলিশ। পরে পুলিশ হেফাজতে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পর থেকেই হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ইরান। মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, এ পর্যন্ত ৩০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, বিক্ষোভ থামাতে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। ইতিমধ্যেই তারা ২১ জন বিক্ষোভকারীকে প্রাণদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে।
আসলে হিজাব-বিরোধী আন্দোলন এখন সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়েছে। যে সরকার ১৯৭৯ সালে ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকে ইরান শাসন করে চলেছে। ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডের প্রধান জেনারেল হোসেন সালামির দাবি, এই আন্দোলনের পিছনে ‘পশ্চিমের ষড়যন্ত্র’ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইজ়রায়েল, সৌদি আরব এবং তাদের বন্ধুরা ঈশ্বর ও তাঁর ধর্ম প্রচারকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিকল্পনা করছে।’’