ছবি রয়টার্স।
অতিমারি-আক্রান্ত বিশ্বকে ফের আগের অবস্থায় নিয়ে আসার চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে কাল লন্ডনে শুরু হচ্ছে জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রগুলির শীর্ষ বৈঠক। অতিথি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ১২ এবং ১৩ তারিখ তাতে ভিডিয়ো মাধ্যমে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর আগেও ২০১৯ সালে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত উন্নত অর্থনৈতিক বিশ্বের এই গোষ্ঠীর বৈঠকে আমন্ত্রিত ছিলেন মোদী। কিন্তু এ বারের বৈঠক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বৈঠকের বৃহত্তর কূটনৈতিক ছবিটার দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিশ্ব এবং অবশ্যই চিন। জো বাইডেন এ বার চাইছেন সমমনস্ক রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বৃহত্তর জোট তৈরি করা, যার অন্যতম সদস্য ভারত। এই জোটের অভিমুখ যে চিন-বিরোধী, তা স্পষ্ট। অতিমারি পরবর্তী পৃথিবীতে পশ্চিম বিশ্বের সঙ্গে ভারতের স্বার্থেরও যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এই বছরের সম্মেলনে শুধুমাত্র ভারতকে ডেকেছেন এমনটা নয়। সঙ্গে তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকেও। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, বিশ্বের বড় গণতন্ত্রগুলিকে সঙ্গে নিয়ে ব্রিটেন একটি জোট তৈরি করতে চায়, যে জোট কোভিড পরিস্থিতির মোকাবিলা করে, এমন পরিবেশবান্ধব এক উজ্জ্বল পৃথিবী তৈরি করতে চাইছে। আমেরিকা ও ব্রিটেন— পশ্চিম বিশ্বের এই জোট পরিকল্পনায় ভারতের ভূমিকা যথেষ্ট।
অন্য দিকে, চিনের সঙ্গে গত দেড় বছরের তিক্ততার রেশ নিয়েই এই বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চিনের নেতৃত্বাধীন এশিয়ার অর্থনৈতিক কোনও উদ্যোগে অংশ নিতে আর আদৌ আগ্রহী নয় ভারত। বরং আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে গত কয়েক মাসে ঘনঘন বৈঠক করতে দেখা গিয়েছে সাউথ ব্লকের কর্তাদের। এই বৈঠক অনেকটাই বাণিজ্য সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত। তবে কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, পশ্চিম বিশ্ব এবং ভারত— উভয়েই চিন-বিরোধিতার প্রশ্নে এক মঞ্চে এসে দাঁড়ালেও দু’পক্ষের মধ্যে নীতি ও মতপার্থক্যের জায়গাটিও বড়। উন্নত অর্থনীতিগুলির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে টালবাহানা রয়েই গিয়েছে। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি এখনও অধরা স্বপ্ন ।
সব মিলিয়ে আসন্ন আন্তর্জাতিক অধিবেশনটি এই কোণঠাসা সময়ে ভারতকে কতটা সুবিধা এনে দিতে পারে এখন সেটাই দেখার।