(বাঁ দিকে) আমেরিকায় মৃত ভারতীয় ছাত্র অকূল ধওয়ান। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
এক মাস আগে আমেরিকায় মৃত্যু হয়েছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছাত্র অকূল ধওয়ানের। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, ঠান্ডায় জমে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। বার বার আবেদন করা সত্ত্বেও তাঁকে নাইট ক্লাবে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও সেই ছবি ধরা পড়েছে। রাতের ঠান্ডায় তিনি হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার ফলে মৃত্যু হয়।
শিকাগোর ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন অকূল। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের নাইট ক্লাবেই গত ২০ জানুয়ারি রাতে তিনি তাঁর বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ঢুকতে চেয়েছিলেন। অভিযোগ, বাকিদের ক্লাবে ঢুকতে দেওয়া হলেও অকূলকে বাধা দেন কর্তৃপক্ষ। বার বার তিনি ক্লাবে গিয়ে প্রবেশের অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রতি বারই তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
রাত সাড়ে ১১টা থেকে ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন অকূল। সে দিন শহরের তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে। বাইরে থাকার কারণেই ঠান্ডা লেগে গিয়েছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছাত্রের। যা পরবর্তীতে তাঁর মৃত্যু ডেকে আনে। শ্যাম্পেন কাউন্টি কর্নারের তরফে একটি রিপোর্ট ২০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে এই তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে পরের দিন সকালে অকূলের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। প্রথমে তাঁর মৃত্যুর কারণ জানা যাচ্ছিল না। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। এত দিনে মৃত্যুর কারণ জানা গিয়েছে।
অকূলের বন্ধুরা জানান, সে দিন রাতে তাঁরা অকূলকে বহু বার ফোন করেছিলেন। কিন্তু এক বারও ফোন ধরেননি অকূল। পরে তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হন। সকালে উদ্ধার করা হয় দেহ। সে রাতে অকূল মদ্যপান করেছিলেন বলেও রিপোর্টে উঠে এসেছে।
যে জায়গাটি থেকে অকূলের নিখোঁজের অভিযোগ জানানো হয়েছিল, তার থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে অকূল পড়ে ছিলেন। তাঁর পরিবারের প্রশ্ন, কেন এই সামান্য দূরত্বে ছাত্রকে খুঁজে পেতে ১০ ঘণ্টা সময় লাগল? রাতে অভিযোগ জমা পড়ার পরেও কেন তাঁকে খুঁজে পাওয়া গেল না? সঠিক সময়ে তাঁকে খুঁজে পাওয়া গেলে হয়তো মৃত্যু এড়ানো যেত। অকূলের বাবা, মা ক্যালিফর্নিয়ার বাসিন্দা। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা।
গত কয়েক সপ্তাহে আমেরিকা থেকে পর পর ভারতীয় বা ভারতীয় বংশোদ্ভূত পড়ুয়াদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর এসেছে। যা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অভিযোগ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমেরিকায় বর্ণবৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ভারতীয়েরা।