স্ত্রী, পুত্র, কন্যার সঙ্গে জগদীশ বলদেবভাই পটেল (বাঁ দিকে)। ছবি: এক্স।
মানবপাচারের মামলায় এক ভারতীয় বংশোদ্ভুতকে গ্রেফতার করা হল আমেরিকায়। গুজরাতি পরিবারের চার জন বেআইনি ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে আমেরিকায় প্রবেশের সময় মানিটোবার দক্ষিণে ঠান্ডায় জমে মারা গিয়েছিলেন। দু’বছর আগে। সেই ঘটনায় ভারতীয় বংশোদ্ভুত হর্ষকুমার পটেলকে গ্রেফতার করা হল।
গত সপ্তাহে শিকাগো বিমানবন্দরে গ্রেফতার হন পটেলে। তিনি ‘ডার্টি হ্যারি’, ‘পরম সিংহ’, ‘হরেশ রমেশলাল পটেল’ নামেও পরিচিত। পটেলের বিরুদ্ধে আমেরিকায় ভিন্দেশিদের অনুপ্রবেশ করানোর অভিযোগ রয়েছে। আদালতে পেশ করা নথি থেকে জানা গিয়েছে, মানবপাচারের জন্য স্টিভ শ্যান্ড নামে এক ব্যক্তিকে নিয়োগ করেছিলেন পটেল। শ্যান্ড ফ্লোরিডার বাসিন্দা। তিনি নিজেও পাচারকারী। ২০২২ সালে গুজরাতি পরিবারের চার সদস্যের দেহ উদ্ধারের পর শ্যান্ডকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আমেরিকায় ভারতীয়দের অনুপ্রবেশ করানোর নেপথ্যে যে চক্র কাজ করে, তার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন পটেল। পটেল এবং শ্যান্ডের মধ্যে যে যোগাযোগ ছিল, তার প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ। গাড়ি ভাড়া, হোটেল, টাকার লেনদেন নিয়ে তাঁদের কথা হত বলে জানিয়েছে পুলিশ। একটি মেসেজে পটেল শ্যান্ডকে লিখেছিলেন, ‘‘তুষারঝড়ের উপযুক্ত পোশাক যাতে পরে সকলে, সে দিকে নজর রেখো।’’ জেরায় পুলিশকে শ্যান্ড জানিয়েছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মিনেসোটার আন্তর্জাতিক সীমান্তে পাঁচ বার গিয়েছিলেন তিনি। ভারতীয়দের বেআইনি ভাবে প্রবেশ করিয়েছিলেন আমেরিকায়।
২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি মানিটোবার এমারসনের কাছে জগদীশ বলদেবভাই পটেল, তাঁর স্ত্রী বৈশালীবেন জগদীশকুমার পটেল, মেয়ে বিহঙ্গী জগদীশকুমার, ছেলে ধার্মিক জগদীশকুমারের দেহ মেলে। ঠান্ডায় জমে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল তাঁদের। ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি টরন্টোয় পৌঁছয় পটেল পরিবার। টরন্টো থেকে মানিটোবা গিয়েছিল সেই পরিবার। সেখান থেকে এমারসনের দিকে রওনা হয়েছিল। সেখান দিয়ে বেআইনি ভাবে আমেরিকায় প্রবেশের কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু চরম ঠান্ডার কারণে পথেই মৃত্যু হয় তাঁদের। কানাডার সীমান্তের কাছে কোনও গাড়ির দেখা মেলেনি। পুলিশের অনুমান, কেউ তাঁদের সেখানে ছেড়ে দিয়ে চলে গিয়েছিল।