অভিযুক্ত ভারতীয় বংশোদ্ভূত দম্পতি। ছবি ব্রিটেনের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক দম্পতিকে ৩৩ বছর কারাদণ্ডের সাজা শোনাল ব্রিটেনের আদালত। মাদক পাচার, আর্থিক তছরুপ-সহ খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও ছিল এই দম্পতির বিরুদ্ধে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আরতি ধীর (৫৯) এবং তাঁর স্বামী কাভালজিৎ সিংহ (৩৫), দু’জনেই থাকতেন লন্ডনে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় কোটি কোটি টাকার কোকেন পাচারের। তার পর তাঁরা লন্ডনে চলে যান। সেখানেই তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা সোনা-রূপা উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ ছিল প্রায় ২৫ কোটি। এ ছাড়াও বিপুল সম্পত্তির হদিস পায় পুলিশ।
আরতি এবং কাভালজিতের বিরুদ্ধে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও রয়েছে। গুজরাতের বাসিন্দা এই দম্পতি, গোপাল সেজানি নামে এক ছেলেকে দত্তক নেন। ২০১৭ সালে গোপালকে অপহরণ করেন দু’জন। পরে তাকে রাস্তার ধারে ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়। শরীরে ছিল ছুরির আঘাতের চিহ্ন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় গোপালের। এই অপহরণ এবং খুনের ঘটনায় ষড়যন্ত্রের ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন আরতি এবং কাভালজিৎ। তদন্তে জানা গিয়েছে, ছেলের নামে করা জীবনবিমার টাকা হাতানোর জন্যই খুন করার ছক কষেছিলেন তাঁরা।
যদিও গুজরাত পুলিশ ওই দম্পতিকে ধরতে পারেনি। ভারত ছেড়ে পালান তাঁরা। সোজা চলে যান অস্ট্রেলিয়া। অভিযোগ ওঠে, প্রায় সাত টন কোকেন ‘অভিনব’ উপায়ে পাচার করেছেন তাঁরা। ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করে ব্রিটেনের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। তবে তারা মাত্র ০.৬ টন কোকেনের উদ্ধার করতে পারে। যার বাজার মূল্য ৪৭৪ কোটি টাকা।
দীর্ঘ দিন মামলা চলার পর ব্রিটেনের আদালত আরতি এবং কাভালজিৎকে দোষী সাব্যস্ত করে। বিচারক বলেন, ‘‘মাদক সমাজের জন্য খুবই ক্ষতিকর। মাদকের প্রভাবেই মানুষ বিভিন্ন অপরাধ করেন।’’ তাই ‘দ়ৃষ্টান্তমূলক’ শাস্তি হিসাবে ৩৩ বছরের সাজা দেওয়া হল।