অভিজাত পরমাণু ক্লাবে (নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপ, সংক্ষেপে এনএসজি) ভারতের অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে দীর্ঘদিনের বাধা চিনের দেওয়াল। এ বার সেই দেওয়ালে চিড় ধরাতে চায় মোদী সরকার। সম্প্রতি বেজিং-এ দু’দেশের নিরস্ত্রীকরণ এবং পরমাণু অস্ত্র সম্প্রসারণ বিরোধী বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, বেজিং-ও ভারতের পরমাণু সম্প্রসারণ বিরোধী ভূমিকার দিকটি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের বক্তব্য, ‘‘যে যে বিষয় আমাদের উদ্বেগের কারণ, তা বিভিন্ন স্তরের আলোচনায় চিনের সামনে তোলা হয়েছে।’’
গত বছর ডোকলামে দু’দেশের মধ্যে সংঘাত কমিয়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন বর্তমান বিদেশসচিব বিজয় গোখলে। সূত্রের খবর, চিন-নীতিতে পোড় খাওয়া এই কূটনীতিবিদ এনএসজি প্রশ্নে চিনকে নরম করায় আপাতত অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। গত বছর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের কট্টরপন্থী চিনা নীতি শেষপর্যন্ত বদলাতে হয় মোদী সরকারকে। তৎকালীন বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর যে কৌশল নিয়েছিলেন, এ বার তা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন বিজয়। চলতি বছরের গোড়ায় চিন প্রসঙ্গে নরম সুর নেওয়া হয়েছে। চিনকে এটা বোঝানো চলছে, এনএসজি-র ছাড়পত্র ভারতকে যদি দেয় বেজিং, তাহলে বাণিজ্য-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘সাধ্যমতো প্রতিদান’ও দেওয়া হবে। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ভারতকে এনএসজি-তে ঢোকার অনুমতি দিলে পাকিস্তানকেও ওই সংস্থার সদস্য করা কিছুটা সহজ হবে চিনের পক্ষে। এই সমস্ত দিক চিনও খতিয়ে দেখছে বলে জানা গিয়েছে।
আগামী জুনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর শীর্ষ বৈঠকে বিষয়টি যে গুরুত্ব পেতে চলেছে, তা স্পষ্ট। আগামী মাস থেকেই শুরু হবে চিনের সঙ্গে বিভিন্ন স্তরের দৌত্য। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের বেজিং-এ যাওয়ার কথা। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা চিনে গিয়ে কমিউনিস্ট নেতা তথা কেন্দ্রীয় কমিটির বিদেশনীতি বিষয়ক অধিকর্তা ইয়াং জিয়েচির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ‘যৌথ ভাবে উন্নয়নের পথে এগোবে বলে একমত হয়েছে ভারত এবং চিন।’