—ফাইল চিত্র
বাংলাদেশে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ ভারতের থেকে পাওয়া প্রথম দফার টিকা নিয়ে বসে রয়েছেন পরবর্তী ডোজ়ের জন্য। দ্বিতীয় ডোজ়ের সময় পেরিয়ে গিয়েছে আড়াই-তিন মাস। আজ নয়াদিল্লি স্পষ্ট জানিয়ে দিল, আপাতত যা পরিস্থিতি তাতে কোনও ভাবেই অন্য কোনও রাষ্ট্রকে কোভিডের প্রতিষেধক পাঠাতে পারবে না ভারত। বরং তারা এখন আমদানির জন্যই ঝাঁপিয়েছে।
আজ এই নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন যে, প্রতিষেধক এবং অন্যান্য সরঞ্জাম বাইরের দেশগুলিতে রফতানির ক্ষেত্রে ভারতই সবার আগে ছিল। কিন্তু আমরা এখন বাইরে থেকে সরবরাহ (প্রতিষেধক) আমদানিকেই নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ করছি। সেই প্রেক্ষাপটে প্রতিষেধক রফতানির করার প্রশ্ন ওঠাটাই ঠিক নয়। আমরা এখন ঘরোয়া প্রতিষেধক তৈরির কর্মসূচিকেই মূল লক্ষ্যবস্তু করেছি।”
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, খুবই প্রাঞ্জল করে মুখপাত্র জানিয়ে দিয়েছেন যে, প্রতিষেধক রফতানির প্রশ্নই কেন উঠছে না। তার কারণ দেশে যে ভাবে টিকাকরণ করা সম্ভব হবে বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল তার ধারকাছ দিয়েও যেতে পারেনি মোদী সরকার। কিন্তু সেই সঙ্গে এই বিতর্কও উঠছে যে, কেন্দ্র নিজে থেকেই বারবার বাংলাদেশ-সহ গোটা বিশ্বকে আশ্বস্ত করেছিল ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর নীতির কথা বলে। এপ্রিলের গোড়ায়, অর্থাৎ ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার ঠিক আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাইসিনা সংলাপে জানিয়েছিলেন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ভারতের যে-টুকু সম্পদ তা গোটা বিশ্বের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়াতেই বিশ্বাস করে তাঁর সরকার। তাই বিদেশ মন্ত্রক বিস্মিত হলেও টিকা রফতানির বিষয়টিকে প্রাসঙ্গিক বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির
বাংলাদেশের বক্তব্য, ভারতের এ-হেন আশ্বাসেই অন্য কোনও দেশের দিকে তাকানো হয়নি। এমনকি প্রাথমিক ভাবে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল চিনকেও। ঢাকা সূত্রের বক্তব্য, ‘‘উপায়ান্তর না দেখে সেই এখন চিনেরই দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। যদিও আমরা এখনও জানি না, যাঁরা ভারতের কাছ থেকে প্রথম ডোজ় নিয়ে বসে রয়েছেন তাঁদের এখন প্রোটোকল কী হবে?’’ বাংলাদেশ সূত্রে অবশ্য এ কথাও জানা যাচ্ছে, বিদেশসচিব এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রাক্তন ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বেশ কিছু দিন আগেই ঘরোয়া ভাবে ঢাকাকে সতর্ক করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ যেন তাদের নাগরিকদের জন্য প্রতিষেধকের বিকল্প ব্যবস্থা করতে শুরু করে। কারণ, অন্য দেশকে দেওয়ার মতো বাড়তি টিকা ভারতের হাতে নেই।