— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ভারত-মলদ্বীপের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে চাপানউতর জারি। দ্বীপরাষ্ট্রের উপর ক্রমেই প্রভাব বাড়ছে চিনের। এই আবহে মলদ্বীপে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস রফতানিতে অনুমোদন দিল ভারত। শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, চিনি, পেঁয়াজ, চাল, গমের মতো কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস নির্দিষ্ট মাত্রায় রফতানি করা যাবে মলদ্বীপে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশে চাল, গম, পেঁয়াজ, চিনির মূল্য যাতে লাগাম নিয়ন্ত্রণে থাকে, সে জন্য এগুলির রফতানিতে লাগাম পরিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু মলদ্বীপের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। একটি বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্র জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এই সব পণ্য মলদ্বীপে রফতানির ক্ষেত্রে কোনও ‘নিষেধাজ্ঞা’ থাকবে না। ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ।
এই ছাড়পত্রের ফলে মলদ্বীপে ১ লক্ষ ২৪ হাজার ২১৮ মেট্রিক টন চাল, ১ লক্ষ ৯ হাজার ১৬২ টন আটা, ৬৪ হাজার ৪৯৪ টন চিনি, ২১ হাজার ৫১৩ টন আলু, ৩৫ হাজার ৭৪৯ টন পেঁয়াজ এবং ৪২৭ কোটি ৫০ লক্ষ ডিম রফতানি করবে ভারত। পাশাপাশি, মলদ্বীপে ১০ লক্ষ টন পাথরের টুকরো এবং ১০ লক্ষ নদীর বালি রফতানিরও অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বরাবর ভারতের বন্ধু বলে পরিচিত মলদ্বীপ। গত অক্টোবরে সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মহম্মদ মুইজ্জু, যিনি ‘চিনপন্থী’ হিসাবে পরিচিত। ক্ষমতায় এসে তিনি ভারতকে সে দেশ থেকে সেনা সরানোর জন্য সরকারি ভাবে অনুরোধ করেন। সময়সীমাও বেঁধে দেন। সেই নিয়েই দু’দেশের টানাপোড়েন শুরু হয়। যদিও এই আবহেই গত মাসে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট সুর নরম করে জানান, ভারত মলদ্বীপের ‘ঘনিষ্ঠ সহযোগী’-ই থাকবে। নয়াদিল্লির কাছে ঋণ মকুবের আর্জি জানিয়ে এই কথা বলেন তিনি। গত বছরের শেষে ভারত থেকে ৪০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল মলদ্বীপ। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২,৯০০ কোটি টাকা।
২০১০ সাল থেকে একটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে ভারতীয় সেনার ৮০ জন সদস্য মলদ্বীপে রয়েছেন। মলদ্বীপের সেনাকে যুদ্ধ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও দেয় তারা। পাশাপাশি মলদ্বীপের অন্তর্গত প্রত্যন্ত দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য মানবিক সহায়তা এবং চিকিৎসা উপাদান পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও রয়েছে ভারতীয় সেনার কাঁধে। সেই সেনাকেই মলদ্বীপ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা জানিয়েছিল মলদ্বীপ প্রশাসন। পরে তারা এও দাবি করে, সে দেশ থেকে সেনা সরাতে শুরু করেছে নয়াদিল্লি।