India-Maldives Relationship

মলদ্বীপের মুইজ্জু সরকার সেনা সরাতে বলার পরেই বিবৃতি দিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক, কী জানাল নয়াদিল্লি

মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর সচিবালয়ের এক শীর্ষ আধিকারিক সে দেশের একটি সংবাদপত্রকে বলেছেন, “ভারতীয় সেনারা মলদ্বীপে থাকতে পারবেন না। কারণ এটাই মুইজ্জু এবং তাঁর সরকারের সিদ্ধান্ত।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৪১
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

মলদ্বীপ থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য ভারতকে ‘আর্জি’ জানিয়েছে সে দেশের সরকার। সেনা সরানোর জন্য রীতিমতো সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই আবহে বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, মলদ্বীপে বিমান চলাচল করতে পারে এমন পরিস্থিতি বজায় রাখতে পারস্পরিক সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছে ভারত।

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, “মলদ্বীপের মানুষের কাছে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দিতে ভারতীয় বিমানগুলির চলাচল জারি রাখা জরুরি। এবং এই কাজের পরিবেশ বজায় রাখতে উভয় পক্ষই একটি সমাধানসূত্রে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে।” মলদ্বীপ এবং ভারতের সম্মতিক্রমে একটি নির্দিষ্ট দিন বেছে নিয়ে পরবর্তী আলোচনা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে। প্রসঙ্গত, বায়ুসেনার বেশ কয়েকটি বিমান মলদ্বীপের প্রান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতে ওষুধ এবং ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে।

মলদ্বীপ থেকে ভারতের সেনা সরানোর বিষয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনা করতে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করে মহম্মদ মুইজ্জুর সরকার। এই বিষয়ে ভারতও সম্মতি জানিয়েছিল বলে জানা যায়। মলদ্বীপ সরকারের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এই কমিটির দ্বাদশ বৈঠকে ১৫ মার্চের মধ্যে সেনা সরানোর জন্য ভারতকে আর্জি জানানো হয়েছে। মুইজ্জুর সচিবালয়ের শীর্ষ আধিকারিক আবদুল্লা নাজ়িম ইব্রাহিম সে দেশের একটি সংবাদপত্রকে বলেছেন, “ভারতীয় সেনারা মলদ্বীপে থাকতে পারবেন না। কারণ এটাই প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু এবং তাঁর সরকারের সিদ্ধান্ত।”

Advertisement

নভেম্বর মাসে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই ভারতকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে মুইজ্জু বলেছিলেন, ‘‘আমাদের দেশের মাটি থেকে সমস্ত বিদেশি সেনাকে আমরা ফেরত পাঠাব।’’ এ ক্ষেত্রে মুইজ্জু নাম না-করলেও স্পষ্ট ভাবেই ভারতকে নিশানা করেন। কারণ, ভারত মহাসাগরের ওই দ্বীপরাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এবং শিল্পক্ষেত্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ভারতীয় সেনা। তবে চলতি বিতর্কের আবহে মলদ্বীপের এই সময় বেঁধে দিয়ে সেনা সরাতে বলার ‘আর্জি’কে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর মোদীর সাম্প্রতিক লক্ষদ্বীপ সফরের পরেই ভারত এবং তাঁর সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী এবং বেশ কিছু রাজনীতিক। বিতর্ক এবং ঘরে-বাইরে চাপের মধ্যে তিন মন্ত্রীকেই সাসপেন্ড করেন মুইজ্জু। তার পরেও অবশ্য দুই দেশের সম্পর্ক খুব একটা সহজ হয়নি। সমাজমাধ্যমে ভারতীয় নেটাগরিকদের ‘বয়কট মলদ্বীপ’-এর ঠেলা সামলাতে হিমশিম খেতে হয় ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রকে। আগে থেকে মলদ্বীপে ঘুরতে যাওয়ার বিমান-হোটেলে টিকিট বুক করে রাখার পরেও তা বাতিল করেন একের পর এক ভারতীয়। এই প্রবণতা এখনও বন্ধ হয়নি।

মলদ্বীপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এমনিতেই ‘চিনপন্থী’ বলে পরিচিত মুইজ্জু গত সপ্তাহেই পাঁচ দিনের জন্য চিন সফরে যান। সফরের তৃতীয় দিনে গত বুধবার জিনপিংয়ের সঙ্গে রাজধানী বেজিংয়ে বৈঠক করেন মুইজ্জু। সেখানেই ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের আবহে মলদ্বীপের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন চিনা প্রেসিডেন্ট তথা কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষনেতা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই বৈঠকেই বেজিংকে তাঁদের ‘পুরনো বন্ধু এবং ঘনিষ্ঠতম সহযোগী’ বলেন মুইজ্জু। চিন থেকে দেশে ফিরেই শনিবার মুইজ্জু হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছিলেন, কাউকে ধমকানোর ছাড়পত্র দেয়নি তার সরকার। অনেকেরই মত, তিনি নাম না করে ভারতকেই নিশানা করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement