ছবি: রয়টার্স।
আফগানিস্তান থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার করতে আরও চার্টার্ড বিমান ভাড়া করার পরিকল্পনা করছে সরকার। সূত্র মারফৎ এমনই জানা গিয়েছে। তবে কাবুলে দূতাবাস বন্ধ করা হয়নি বলেও সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে। যদিও আফগানিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত-সহ দূতাবাস কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আফগানিস্তানের কর্মীরাই দূতাবাসের কাজকর্ম সমালাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই প্রায় সতেরোশো ভারতীয় দেশে ফেরার আবেদন জানিয়েছেন।
আমেরিকা ইতিমধ্যেই তাদের রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে। জাপানও তাদের দূতাবাসের কর্মীদের উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে। কাবুলে তাদের দূতাবাস সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিয়েছে জাপান। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আফগানিস্তানের উন্নয়নমূলক কাজে আর্থিক সাহায্য সাময়িক ভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি। সে দেশের উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী গার্ড মুলার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, সাময়িক ভাবে আফগানিস্তানে উন্নয়নমূলক কাজে সহযোগিতা বন্ধ করা হচ্ছে। আপাতত সেখান থেকে উদ্ধারকাজের উপরই জোর দেওয়া হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও উদ্ধারকাজের উপর জোর দিতে চাইছে। সদস্য দেশগুলির প্রতিনিধিদের উদ্ধারই এখন প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
অন্য দিকে, তালিবানের হাতে কাবুল বিমানবন্দর অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর ব্যাপক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। মঙ্গলবার এ কথাই জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র তারিখ ইয়ারাসেভিচ। যদি এ রকম পরিস্থিতি চলতে থাকে তা হলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তিনি। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে এই তালিবানি অভ্যুত্থানের কারণে দেশে জরুরি ওষুধ সরবরাহ বাধা পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারিক। কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে তালিবান। সেখানে তাদের নজর এড়িয়ে যেন কোনও কাক-পক্ষী ঢুকে না পড়ে সে রকম ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে তালিবান। সোমবার যে ঘটনা ঘটেছিল তার পর থেকে আরও কঠোর পদক্ষেপ করেছে তারা। সমস্ত রকম বাণিজ্যিক বিমানের উড়ান বন্ধ করে দিয়েছে তালিবান।
মহিলা এবং মেয়েদের যাতে যোগ্য সম্মান দেওয়া হয়, তাঁদের কাজে ফেরানো এবং শিক্ষার বিষয়ে যাতে নজর দেওয়া হয়, মঙ্গলবারই তালিবানকে সে দিকে জোর দিতে বলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। যদিও কাবুল দখল করার পরই তালিবান আশ্বাস দিয়েছে কোনও রকম জোর জবরদস্তি করা হবে না। তালিবানের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মৌলবী মহম্মদ ইয়াকুবও যোদ্ধাদের নির্দেশ দিয়েছেন কোনও বাড়িতে জোর করে ঢুকে সম্পত্তি দখল করা যাবে না। একই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন, যাঁরা এই নির্দেশ অমান্য করবে তাদের বিদ্রোহের আইনে দোষী সাব্যস্ত করা হবে। কিন্তু কথা আর কাজ কি এক হবে, তা নিয়ে বিস্তর সংশয় তৈরি হয়েছে।
তবে তবে পাক-তালিবান আফগানিস্তানে তালিবানের এই ‘জয়’কে ‘ইসলাম দুনিয়ার জয়’ বলে আখ্যা দিয়ে আফগান তালিবান সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছে। তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান-এর মুখপাত্র মহম্মদ খোরাসানি জানান, ইসলামিক এমিরেটস অব আফগানিস্তান গড়ে তোলার জন্য আফগান তালিবানকে সমর্থন এবং সহযোগিতা করে যাবেন তাঁরা।