রবিবার থেকেই সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। শুধুমাত্র এই বিমানবন্দরের ছবি দিয়েই আফগানিস্তানের ভয়াবহ পরিস্থিতির কিছুটা আঁচ মেলে। গত রবিবার রাত থেকেই কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হতে শুরু করেন বিমানবন্দরে। প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে চেয়েছেন হাজার হাজার আফগান। সকলেই বিমানবন্দরমুখী। বিমানবন্দরের যে ছবি ফুটে উঠেছে, তা শিহরণ জাগায়। নেটমাধ্যমে এই সব ছবি এখন ভাইরাল।
সোমবারের চিত্র। হুড়োহুড়ি করে, একে অপরকে ঠেলে বিমানে উঠছেন শয়ে শয়ে মানুষ।
ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য বিমানবন্দরে নিরাপত্তারক্ষীরা শূন্যে গুলি ছোড়েন। তাতেও কোনও ফল মেলেনি। জনসমুদ্রে পরিণত হওয়া রানওয়ে ফাঁকা করতে পারেননি তাঁরা। গুলির আঘাত এবং পদপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় সাত জনের।
এই পরিস্থিতিতেই কোনওক্রমে শেষ বিমান ছাড়ে। তার চাকায় নিজেদের বেঁধে উঠে পড়েছিলেন কয়েক জন। বিমান আকাশে ওড়ার পর পড়ে মৃত্যু হয় তিন জনের। অনেকে আবার রানওয়েতে চলতে শুরু করা বিমানের পিছনে দৌড়তেও থাকেন।
মঙ্গলবার পুরোপুরি বন্ধ হযে যায় বিমান পরিষেবা। তা সত্ত্বেও দিনভর বিমানবন্দরের দিকে ছুটেছেন কাতারে কাতারে মানুষ।
পরিজনদের হারিয়ে ফাঁকা বিমানবন্দরে এক দুধের শিশুর আর্তনাদের ছবি মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভাইরাল হয়ে যায়। সেই শিশুর মা-বাবার কোনও খোঁজ মেলেনি। তাঁরা জীবিত রয়েছেন কি না, তা-ও জানা যায়নি।
এই দিন আরও একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায় প্রাণ হাতে নিয়ে বিমানবন্দরের পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছেন এক ব্যক্তি। নীচে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে থাকা এক তালিব তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
বিমানবন্দরের ভিতরের সেই সাজানো-গোছানো চিত্র পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। দেখে মনে হবে, তা যেন এখন কোনও ধ্বংসস্তূপ। মানুষের হুড়োহুড়িতে ভেঙেচুরে গিয়েছে বসার জায়গা, কাউন্টারগুলি।
এখনও বিমানবন্দরের ভিতরে প্রবেশ করতে পারেনি তালিবান। তবে বিমানবন্দরে বাইরে তাঁদের বন্দুকের গুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।