লরার তাণ্ডব। ছবি- এএফপি।
আমেরিকার লুইজিয়ানা প্রদেশে তাণ্ডব চালানোর পরে শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হল ঘূর্ণিঝড় লরা।
বৃহস্পতিবার প্রায় ২৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে লুইজিয়ানার দক্ষিণপশ্চিম অঞ্চলে আছড়ে পড়ে এই ঘূর্ণিঝড়। প্রাণ হারান মোট ছ’জন। ১৪ বছরের এক কিশোরী এবং ৬৮ বছরের এক বৃদ্ধ-সহ গাছের তলায় চাপা পড়ে প্রাণ গিয়েছে মোট চার জনের। তাঁরা সকলেই আলাদা আলাদা অঞ্চলের বাসিন্দা। ঝড়ের সময়ে নৌকাডুবিতে মারা যান এক জন। পাশাপাশি তীব্র ঝোড়ো হাওয়ার জেরে জেনারেটর থেকে বাড়ির ভিতরে ক্ষতিকারক গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে এক জনের।
প্রদেশ জুড়ে বহুতলগুলির বিপুল ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লেক চার্লস শহর। বহু বাড়ির ছাদ উড়ে গিয়েছে। উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়েছে সেই সব ছবি। উপড়ে গিয়েছে অগুনতি গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি। প্রদেশ জুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কমপক্ষে ৯ লক্ষ বাড়ি। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে উল্টে গিয়েছে বহু গাড়িও। জলমগ্ন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাও। অন্য দিকে ল্যান্ডফলের পর পরই এক রসায়ন কারখানায় আগুন লেগে যায়। তবে দমকলের তৎপরতায় তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে বলে জানায় প্রশাসন। যদিও ক্ষতিকারক ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে সেই ছবি। ন্যাশনাল গার্ডের কমপক্ষে ১,৫০০ জন সদস্য দুর্গতদের উদ্ধার এবং ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজে নেমেছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। উদ্ধারকর্মী পাঠিয়েছে নিউ জার্সি এবং অ্যারিজ়োনার মতো প্রতিবেশী প্রদেশগুলিও।
আরও পড়ুন: পরিদর্শনে কিম, ইতি জল্পনায়
এখনও পর্যন্ত এই অঞ্চলে আছড়ে পড়া ঘূর্ণঝড়গুলির মধ্যে লরা সবচেয়ে শক্তিশালী বলে জানাচ্ছেন আবহবিদেরা। তবে প্রশাসনের তরফে এই ‘ক্যাটাগরি ৪’
ঘূর্ণিঝড়ের জেরে যে পরিমাণ ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়েছিল, ততটা হয়নি বলে শুক্রবার কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন লুইজিয়ানার গর্ভনর জন বেল এডওয়ার্ডস। একই সুর মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের গলাতেও। তাঁর কথায়, ‘‘যতটা বিধ্বংসী রূপ নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি তেড়ে এসেছিল, ক্ষতির পরিমাণ তার তুলনায় কম বলে মনে হচ্ছে।’’ জলস্তর এখনও স্বাভাবিক হয়নি। রয়েছে তীব্র ঝোড়ো হাওয়াও। এই আবহে বাসিন্দাদের বারবার
সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
বৃহস্পতিবার ফেডারেল এমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (ফেমা)-র কাছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার
খবরাখবর নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই দিন রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে তাঁর কর্মসূচি পিছিয়ে দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাবেন বলে প্রাথমিক ভাবে ঠিক করলেও পরে তা বাতিল করেন ট্রাম্প। তবে সপ্তাহের শেষে প্রেসিডেন্ট সেখানে যেতে পারেন বলে হোয়াইট হাউস সূত্রে জানানো হয়েছে।