৫০ বছরে প্রথম চুরি স্কট-দ্বীপে

লম্বায় চার মাইলও নয়। চওড়ায় সাকুল্যে এক মাইল। হাতে গুনে জনা ছাব্বিশ মানুষের বাস। গোটা এলাকায় নেই কোনও থানা। থানার প্রয়োজনই বা কী? গত পাঁচ দশকে বড়সড় অপরাধ তো দূরস্থান, ছিচকে চুরি-চামারি পর্যন্ত হয়নি ‘কানা’ নামে স্কটল্যান্ডের এই খুদে দ্বীপটিতে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৫ ০২:৪৯
Share:

লম্বায় চার মাইলও নয়। চওড়ায় সাকুল্যে এক মাইল। হাতে গুনে জনা ছাব্বিশ মানুষের বাস। গোটা এলাকায় নেই কোনও থানা। থানার প্রয়োজনই বা কী? গত পাঁচ দশকে বড়সড় অপরাধ তো দূরস্থান, ছিচকে চুরি-চামারি পর্যন্ত হয়নি ‘কানা’ নামে স্কটল্যান্ডের এই খুদে দ্বীপটিতে।

Advertisement

দীর্ঘ ৫০ বছরের রেকর্ড ভাঙল এ বার। এলাকার একমাত্র দোকানের তাক ফাঁকা করে ছটি উলের টুপি, মিষ্টি, চকোলেট, কফি, বিস্কুট, ব্যাটারি থেকে প্রসাধনী পর্যন্ত নিয়ে গেল চোর।

কানা সম্প্রদায় উন্নয়ন ট্রাস্টের মালাকানাধীন এই দোকানটি মূলত চালাতেন দুই স্বেচ্ছাসেবী। ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকত দোকানের দরজা। যাতে নৌকার খালাসি, মাঝি থেকে পথ চলতি মানুষ প্রয়োজন মতো কেনাকাটা করতে পারেন দোকান থেকে। দোকানে ঢুকলে বিনামূল্যে ওয়াইফাই পরিষেবাও পেতেন তাঁরা। যাঁরা যে জিনিসটা নিতেন তার একটি তালিকা লিখে রেখে যেতেন দোকানের হিসেবের খাতায়। আর সেই জিনিসপত্র ববাদ ধার্য টাকা রেখে যেতেন একটি বাক্সে। সেই বাক্সের নাম ‘সততা বাক্স’।

Advertisement

এমন নাম হবে নাই বা কেন? মানুষের সততার উপর ভরসা করেই তো এতদিন চলেছে দোকান। কোনও দিনও হিসাবে গরমিল হয়নি এতটুকু। তাই গত শুক্রবারের চুরির পর থেকেই মনমরা হয়ে আছেন এখানকার কর্মী স্টুয়ার্ট কনর। স্টুয়ার্টের কথায়, ‘‘আমি দোকানে ঢুকে দেখি অনেক জিনিসই হাওয়া। মিষ্টির তাকও ফাঁকা। পুরো ঘটনাটা বুঝতে পেরে আকাশ থেকে পড়লাম।’’ তবে কোনও টাকা নিয়ে যায়নি চোর। খোয়া গিয়েছে কেবল হাজার কুড়ি টাকার মুদির জিনিসপত্র। স্টুয়ার্টের আফশোস, ‘‘আমার ভাবতে কষ্ট হচ্ছে আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে এরকম ঘটনা ঘটল। এখন দেখছি ২৪ ঘণ্টা আর দোকান খোলা রাখা চলবে না’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৯৬০ সালে শেষ বার চুরি হয়েছিল কানাতে। সেই সময় এলাকার একটি চার্চ থেকে চুরি হয়ে গিয়েছিল কাঠের থালা। তবে কে বা কেন সেই থালা চুরি করে, সেই রহস্যের কিনারা হয়নি আজও। শুক্রবারের চুরির ঘটনাও রহস্যেরই মতো কানার বাসিন্দাদের। ১৩ বছর ধরে এখানকার কাউন্সিলার বিল ক্লার্কও। তিনি বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। আমি আমার কর্মজীবনে এই অঞ্চলে কোনও চুরি হতে দেখিনি। এখানকার লোক রাতেও দরজা বন্ধ করেন কি না সন্দেহ। নিশ্চয়ই বাইরে থেকে আসা কোনও পর্যটকের কাণ্ড।’’

চুরি থেকে শিক্ষা নিয়ে আপাতত দোকানে সিসিটিভি লাগানোর কথা ভাবছেন স্টুয়ার্ট। কিন্তু তাতে দোকানের সততার ভাবমূর্তি ধাক্কা খাবে বলে মনে করছেন তিনি। ‘‘এত ছোট একটা জায়গায় থাকলে প্রতিবেশীদের বিশ্বাস করতেই হয়। ‘‘কিন্তু সততা এই ফল!’’, হতাশ স্টুয়ার্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement