International

মিছিল নিয়ে ওয়াঘার পথে হাফিজ-সালাউদ্দিন, প্রকাশ্যে পাক দ্বিচারিতা

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পাকিস্তান সফরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে উত্তাল পাকিস্তান। জামাত-এ-ইসলামির ডাকা প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়ে ওয়াঘা সীমান্তের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেলেন হাফিজ সইদ, সৈয়দ সালাউদ্দিনের মতো জঙ্গি নেতারা। রাষ্ট্রপুঞ্জ যে সন্ত্রাসবাদীদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, পাকিস্তানের রাজপথে প্রকাশ্যে তাঁদের নেতৃত্বে মিছিল আয়োজিত হল কী করে?

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৬ ১৭:০৭
Share:

রাষ্ট্রপুঞ্জ নিষিদ্ধ করেছে যাঁদের, তাঁরা এ ভাবে প্রকাশ্যে মিছিল করছেন পাকিস্তানে!

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পাকিস্তান সফরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে উত্তাল পাকিস্তান। জামাত-এ-ইসলামির ডাকা প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়ে ওয়াঘা সীমান্তের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেলেন হাফিজ সইদ, সৈয়দ সালাউদ্দিনের মতো জঙ্গি নেতারা। রাষ্ট্রপুঞ্জ যে সন্ত্রাসবাদীদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, পাকিস্তানের রাজপথে প্রকাশ্যে তাঁদের নেতৃত্বে মিছিল আয়োজিত হল কী করে? প্রশ্ন আন্তর্জাতিক মহলের।

Advertisement

কাশ্মীর উত্তাল হতেই রোজ ভারতের বিরুদ্ধে প্ররোচনা দিতে শুরু করেছেন লস্কর-ই-তৈবা এবং হিজবুল মুজাহিদিন প্রধান হাফিজ সইদ এবং সৈয়দ সালাউদ্দিন। সার্ক শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ৩ অগস্ট ইসলামাবাদ যাচ্ছেন। তা রোখার জন্য পাকিস্তানের বিভিন্ন অংশে সভা-সমাবেশের ডাক দিয়েছেন হাফিজ। রাজনাথকে কিছুতেই পাকিস্তানে ঢুকতে দেওয়া উচিত নয় বলে পাক সরকারকে রোজ হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তিনি। হিজবুল মুজাহিদিন প্রধান সালাউদ্দিনও নওয়াজ শরিফকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যে কোনও একটা পথ বেছে নিতে হবে নওয়াজকে। হয় ভারতের পাশে দাঁড়ান, না হলে ভারতের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করুন। যে দিন রাজনাথের পাকিস্তানে পা রাখার কথা, সেই ৩ অগস্ট পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে সইদের সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়া। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই রবিবার মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন জামাত-এ-ইসলামি প্রধান সিরাজুল হক। ‘মার্চ ফর কাশ্মীর’ নামের সেই ভারত বিরোধী মিছিল ওয়াঘা সীমান্তের দিকে যাত্রা শুরু করেছিল। সিরাজুল হকের সঙ্গে সেই মিছিলে যোগ দেন হাফিজ সইদ এবং সৈয়দ সালাউদ্দিন।

কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থনে আয়োজিত মিছিলটি সিরাজুল হক, হাফিজ সইদ, সৈয়দ সালাউদ্দিনদের নেতৃত্বে ভারত বিরোধী স্লোগানে মুখর ছিল। সীর্ষ সন্ত্রাসবাদীদের নেতৃত্বে মিছিল যে ভারত-পাক সীমান্তের দিকে এগোচ্ছে, নয়াদিল্লির কাছেও সে খবর পৌঁছয়। সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক করা হয় বিএসএফ-কে। আটারি আন্তর্জাতিক সীমান্তে তৎপর হয়ে ওঠে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

Advertisement

আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে জেতার জন্য তৈরি হতে বললেন চিনা প্রেসিডেন্ট

হাফিজ সইদ, সালউদ্দিনদের মিছিল অবশ্য ওয়াঘা পর্যন্ত যায়নি। সীমান্ত থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে, বাটাপুরে মিছিল শেষ হয়। কিন্তু এই মিছিলের জেরে ভারত-পাক সম্পর্কে তিক্ততা আরও বড়েছে। প্রথমত, হাফিজ সইদ, সালাউদ্দিনদের মতো সন্ত্রাসবাদীদের রাষ্ট্রপুঞ্জ নিষিদ্ধি ঘোষণা করেছে। দ্বিতীয়ত, হাফিজ সইদ মুম্বই জঙ্গি হানার মূল চক্রী এবং সালাউদ্দিন কাশ্মীরে নাশকতা সৃষ্টিকারী হিজবুল মুজাহিদিনের প্রধান। ভারত দীর্ঘ দিন ধরেই এদের গ্রেফতারি দাবি করছে এবং বিচার চাইছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং প্রতিবেশী দেশে একের পর নাশকতায় অভিযুক্ত এই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। প্রকাশ্যে ভারত বিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে যেতে দিচ্ছে। ভারতীয় কূটনীতিকরা বলছেন, এই মিছিল আবার প্রমাণ করে দিয়েছে, সন্ত্রাস পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় নীতি। আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তান বার বার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও, নিজেদের দেশকে যে তারা সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য বানিয়ে রেখেছে, তা গোটা বিশ্ব আবার দেখতে পেল বলে ভারতীয় কূটনীতিকরা দাবি করছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement