হাফিজ সইদ। ফাইল চিত্র।
লস্কর ই তইবা প্রধান হাফিজ সইদের রাজনৈতিক পরিকল্পনায় বড় ধাক্কা দিল আমেরিকা। আজ সইদের জামাত উদ দাওয়া সংগঠনের রাজনৈতিক শাখা মিল্লি মুসলিম লিগকেও বিদেশি জঙ্গি সংগঠনের তালিকাভুক্ত করেছে মার্কিন বিদেশ দফতর। সেই সঙ্গে ওই দলের ৭ কেন্দ্রীয় নেতাকেও জঙ্গি তালিকাভুক্ত করেছে ওয়াশিংটন। আমেরিকার এই পদক্ষেপে উল্লসিত দিল্লি।
লস্কর ই তইবা ও জামাত উদ দাওয়া অনেক দিন ধরেই মার্কিন জঙ্গি তালিকায় রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা এড়াতে বার বার নাম বদলে কাজ করে হাফিজের সংগঠন। সম্প্রতি হাফিজকে গৃহবন্দিও করে পাক সরকার। কিন্তু প্রমাণের অভাবে লাহৌর হাইকোর্টে মুক্তি পেয়ে যায় লস্কর প্রধান। তার পর থেকেই দল গড়ে পাকিস্তানের রাজনৈতিক মূলস্রোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে হাফিজ। জুলাইয়ে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা। তাতে অংশগ্রহণ করতে চায় হাফিজ ও তার সহযোগীরা।
তবে লস্কর যে এখনও সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম পুরোদমে চালাচ্ছে তা বারবার নানা মঞ্চে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে জানিয়েছে ভারত। হাফিজের পিছনে যে পাক সেনা ও আইএসআইয়ের একটি অংশের প্রবল সমর্থন রয়েছে তাও বার বার জানিয়েছে ভারত।
আজ মার্কিন বিদেশ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, মিল্লি মুসলিম লিগের পাশাপাশি হাফিজের আর এক সংগঠন তেহরিক-ই-আজাদি-কাশ্মীরকেও নিষিদ্ধ তালিকায় আনা হয়েছে। মার্কিন বিদেশ দফতরে সন্ত্রাস দমন সংক্রান্ত বিভাগের নাথান সেলসের কথায়, ‘‘লস্কর যে নামই নিক না কেন তারা এখনও আদতে জঙ্গি সংগঠন। হিংসা ত্যাগ না করেই তারা রাজনীতিতে আসতে চাইছে। লস্করের এই চেষ্টাকে ব্যর্থ করতে নেওয়া সব উদ্যোগের পাশে রয়েছে আমেরিকা।’’ বস্তুত অনেক বার চেষ্টা করেও রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি জোগাড় করতে পারেনি মিল্লি মুসলিম লিগ। পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের আপত্তিতে তাদের আর্জি ঝুলিয়ে রেখেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। মার্কিন চাপেই পাক সরকার কড়া অবস্থান নিতে বাধ্য হচ্ছে বলে ধারণা কূটনীতিকদের একাংশের। হাফিজের দলের কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল্লা খালিদ, মুজাম্মিল ইকবাল হাশিমি, মুহম্মদ হারিস দার, তাবিশ কাভুম, ফইয়াজ আহমেদ, ফয়জল নাদিম ও মহম্মদ এহসানকে জঙ্গি তালিকার অন্তর্ভুক্ত করেছে আমেরিকা। মার্কিন বিদেশ দফতরের দাবি, এরা সকলেই লস্করের জঙ্গি কার্যকলাপের পাণ্ডা। খালিদ লস্করের পেশোয়ারের সদর দফতর সামলায় বলে জানিয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দারা।
ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপে খুশি সাউথ ব্লক। আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত ভারতের অবস্থানকেই সত্য বলে প্রমাণ করল। সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যে ব্যবস্থা নেয়নি সেটা আমরা বারবার বলে এসেছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এটাও আজ স্পষ্ট হয়ে গেল যে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি নাম বদলে পাক ভূখণ্ডের ভিতর অবাধে নিজেদের কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারে।’’ বিদেশ মন্ত্রকের মতে, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে অর্থ সাহায্য করে যাওয়া, জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক দায়িত্বকে অগ্রাহ্য করার কথা আর লুকিয়ে রাখতে পারছে না পাকিস্তান।