-ফাইল ছবি।
আমেরিকায় কাজ করার জন্য এইচ-ওয়ানবি ভিসা বিদেশি নাগরিকদের কাছে ‘স্বর্গের দরজা’ বলে মনে হলেও, ওই ভিসা যাঁরা পান, তাঁদের খুবই দুর্দশার মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে মার্কিন মুলুকে। নানা ভাবে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে কর্মক্ষেত্রে। আমেরিকার জীবনযাত্রার মানের নিরিখে তাঁদের বেতন অত্যন্ত কম। যে পরিবেশে তাঁদের কাজ করতে হচ্ছে, তা আদৌ কাম্য নয়। চাকরির নিরাপত্তা কম। কর্মচারী হিসেবে আনুষঙ্গিক সুযোগসুবিধা, ভাতা পাওয়ার সুযোগটাও বলার মতো নয়।
মার্কিন থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক সংগঠন ‘সাউথ এশিয়া সেন্টার অফ দি আটলান্টিক কাউন্সিল’-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট এ কথা জানিয়েছে। এই বিষয়গুলির উন্নতির জন্য ভিসা আইনের সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন দফতরের (ইউএসসিআইএস) গত বছরের পরিংসংখ্যান জানাচ্ছে, ২০১৮-র ৫ অক্টোবর পর্যন্ত এইচ-ওয়ানবি ভিসাপ্রাপকের মোট সংখ্যা ছিল ৪ লক্ষ ১৯ হাজার ৬৩৭। তার মধ্যে ছিলেন ৩ লক্ষ ৯ হাজার ৯৮৬ জন ভারতীয়।
দিনকয়েক আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, শীঘ্রই এইচ-ওয়ানবি ভিসা আইনের সংস্কার করা হবে। যাতে ওই ভিসাপ্রাপকদের আমেরিকায় থাকার অনিশ্চয়তা দূর করা যায়। ওই ভিসা যাতে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার সহায়ক হয়ে ওঠে। তার পরেই থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক সংগঠনটির এই রিপোর্ট।
আরও পড়ুন- আপাতত বদলাচ্ছে না মার্কিন ভিসা নীতি, স্বস্তিতে ভারতীয়রা
আরও পড়ুন- এইচ-১বি ভিসার আবেদনে শীর্ষে ভারতীয়রাই
হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রন হিরা ও সাউথ এশিয়া সেন্টার অফ দি আটলান্টিক কাউন্সিলের প্রধান ভরত গোপালস্বামীর নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে ওই রিপোর্ট। তাতে মূলত তিনটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এক) প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ওই ভিসাপ্রাপকদের বেতন, অন্যান্য আর্থিক সুযোগসুবিধা বাড়ানো। বিমা ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করা। আমেরিকাকে যদি বিদেশ থেকে ‘সেরা ও উজ্জ্বলতম’ কর্মী আনতে হয়, তবে তাঁদের প্রতি ত্রৈমাসিকে সেরা বেতনটাও দিতে হবে।
দুই) মার্কিন সংস্থাগুলির কর্তৃপক্ষদের মাথায় রাখতে হবে, তাঁরা যাঁদের বিদেশ থেকে এনে কাজ করাচ্ছেন, তাঁরা কাজটা করতে এসেছেন আমেরিকায়। তাই ভিসাপ্রাপকদের সঙ্গে তাঁদের বৈষম্যমূলক আচার-আচরণ করা চলবে না। বেতনবৃদ্ধি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে, নাগরিকত্ব নয়, যোগ্যতাকেই তাঁদের প্রাধান্য দিতে হবে। পরে সেই ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর ক্ষেত্রেও সেটাকেই মানদণ্ড করতে হবে। মার্কিন মুলুকে কাজের লোক নেই বলে, যে কাউকে অন্য দেশ থেকে নিয়ে এসেও নিয়োগ করতে পারবেন না সংস্থার কর্ণধাররা।
তিন) থাকতে হবে একটি যথাযথ কার্যকরী তদন্ত ও শাস্তি ব্যবস্থাও। এখন এটা শুধুই অভিযোগভিত্তিক। এটা বদলাতে হবে। এ সবের জন্যই আশু সংস্কার প্রয়োজন এইচ-ওয়ানবি ভিসা আইনের।